রাজধানীর পশ্চিম নাখালপাড়ার বাড়ির মালিক খুনের ২১ দিন পার হলেও পুলিশের কাছে কোনো ‘ক্লু’ নেই। তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিত ছিল এবং খুনিরা পেশাদার। এখনো আমরা কোনো আসামিকে শনাক্ত করতে পারিনি।
গত ৮ মার্চ দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পশ্চিম নাখালপাড়ার ‘রসুল ভিলা’ নামক একটি বাড়িতে বাসা ভাড়া নেওয়ার কথা বলে বাসায় ঢুকে বৃদ্ধা মালিক আমেনা বেগমকে (৬৫) খুন করে এক দুর্বৃত্ত। ঘটনার পর ওই রাতেই নিহতের ছোট ছেলে রাসেল আহমেদ বাবু অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে তেজগাঁও থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে বলা হয়, বাসা ভাড়া নিতে এসে বাড়ির মালিক আমেনা বেগমকে (৬৫) কুপিয়ে হত্যা করে এক দুর্বৃত্ত। হত্যার পর ওই গৃহকর্ত্রীর গলার চেন ও হাতে থাকা স্বর্ণের চুড়ি খুলে নিয়ে যায় খুনি।
তদন্তকারী কর্মকর্তারা বলছে এর আগেও রাজধানীর দক্ষিণখানে ভাড়াটিয়াবেশী সিরিয়াল কিলাররা একইভাবে বাড়ির মালিকসহ তিনজনকে খুন করেছে। ওই সব ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সিরিয়াল কিলার হিসেবে অজ্ঞাত এক যুবককে পুলিশ এখনও খুঁজছে। ওই চক্রটি নাখালপাড়ার খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।এছাড়াও এ হত্যাকাণ্ডের পরিবারের কেউ জড়িত আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
ইতোমধ্যে হত্যাকারীদের শনাক্তের জন্য পুলিশ আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয়দের সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহ করেছে। সিআইডি ক্রাইম সিন ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মাথার খুলির টুকরো, চুলসহ বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করেছে।
মঙ্গলবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেজগাঁও থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: হত্যাকাণ্ডের ২১ দিন পার হতে চললেও আমরা এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের কোন ‘ক্লু’ পাইনি। হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিত, ভাড়াটিয়াবেশী সিরিয়াল কিলার ধারালো ও ভারি কোন অস্ত্র ব্যবহার করেছে, যার জন্য এক কোপে আমেনা বেগম খুন হয়েছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট আরেক কর্মকর্তা চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ নেই। তবে ঘটনাস্থল থেকে মূল সড়কে বের হওয়ার সড়কের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়, তবে সেখান থেকে উল্লেখযোগ্য কিছু পাওয়া যায় নি। মনে হচ্ছে খুনি পেশাদার। তাকে শনাক্তের জন্য নিহতের পরিবার ও আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
আমেনা বেগমের কোন পারিবারিক দ্বন্দ্ব ছিল কিনা, তার জন্য তার পরিবার ও স্বজনদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সেগুলোর ‘কল ডিটেইলস রেকর্ড’ (সিডিআর) বের করা হয়েছে, সেগুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
মঙ্গলবার বিকেলে নিহতের ছোট ছেলে রাসেল আহমেদ বাবুর সঙ্গে চ্যানেল আই অনলাইনের কথা হয়। তিনি বলেন, আজকে সকালেও আমি থানায় গিয়েছিলাম, পুলিশ সাধ্যমতো হত্যাকারীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে, আমরা সকল প্রকার তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করছি।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত পুলিশের ধারণা বছর দুয়েক আগে রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায় ঘটে যাওয়া কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের ধরণের সঙ্গে এই হত্যাকাণ্ডের অনেক মিল রয়েছে।