পহেলা বৈশাখে কোনো নিরাপত্তা হুমকি নেই জানিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন: নববর্ষের অনুষ্ঠানকে ঘিরে যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় সেন্ট্রাল মাইকিং ব্যবস্থা থাকবে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিকাল ছয়টার মধ্যে উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি পহেলা বৈশাখে পুলিশের করনীয় এবং প্রস্তুতি সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন: নববর্ষের অনুষ্ঠানকে ঘিরে যাতে কোন প্রকার তথ্য বিভ্রাট না হয়,সেজন্য রমনা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পুরো এলাকা জুড়ে সেন্ট্রালই মাইকিং ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। দুই এলাকাতে শতাধিক মাইকিং ব্যবস্থা থাকবে।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ বিভিন্ন পয়েন্টে কড়া নিরাপত্তা থাকবে। পুলিশের পোশাকে এবং সাদা পোশাকে নিরাপত্তকর্মীরা উপস্থিত থাকবেন।
নিরাপত্তার অংশ হিসেবে ডগস্কোয়াড এবং বোমা ডিসপোজাল টিম থাকবে। পুরো ভেন্যু সিসি টিভি দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হবে।
রমনার বটমূলে সকালে ছায়ানটের অনুষ্ঠানে আর্চওয়ে দিয়ে তল্লাশি করে ভেতরে মানুষকে প্রবেশ করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মঙ্গল শোভাযাত্রায়ও পুলিশ প্রহরা থাকবে। পুরো শোভাযাত্রায় সোয়াট বেষ্টনী দিয়ে ঘিরে রাখবে। মাঝপথে কেউ শোভাযাত্রায় প্রবেশ করতে পারবে না। কেউ মুখোশ পড়তে পারবে না। আর যারা মুখোশ ব্যবহার করবেন তাদের একটি তালিকা দেবে চারুকলা ইনিস্টিটিউট থেকে। এছাড়া কেউ কোনো বাণিজ্যিক ব্যানার দিয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নিতে পারবেন না।
তিনি জানান, রমনা পার্কে তিনটি প্রবেশ এবং দুইটি বাইরের গেট থাকবে এবং তিনটি প্রবেশ ও বাহির গেট থাকবে। বিকাল ছয়টার মধ্যে উন্মুক্তস্থানে কর্মসূচি শেষ করতে হবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন: পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে দা, কাচি, ছুরি, দাহ্য পদার্থ বহন করা যাবে না। কেউ যদি ব্যগ নিয়ে আসেন ধাতব বস্তু বহন করা যাবে না। প্রতিটি অনুষ্ঠান থাকবে ধূমপান মুক্ত। ইভটিজিং প্রতিরোধে থাকবে পুলিশের বিশেষ টিম। প্রতিটি অনুষ্ঠানে ভুভুজেলা নিষিদ্ধ থাকবে।
কমিশনার আরো বলেন, সকল অনুষ্ঠানস্থল ঘিরে থাকবে পর্যাপ্ত সংখ্যক পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য। থাকবে ওয়াচ টাওয়ার, টহল ডিউটি, ফুট পেট্রোলিং, লস্ট এন্ড ফাউন্ড সেন্টার, পুলিশের সাব কন্ট্রোল রুম, পুলিশ ব্লাড ব্যাংক ও প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র, ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং, সোয়াট, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, ফায়ার টেন্ডার, এ্যাম্বুলেন্স, নৌ পুলিশের ডুবুরি দল, সমগ্র এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরা আওতায় আনা ইত্যাদি। সকল দর্শনার্থীকে আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর ও ম্যানুয়ালী চেকিং এর পর অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করতে দেয়া হবে।
এছাড়াও প্রতি বছরের ন্যায় ডিএমপি’র পক্ষ থেকে এবারও ফুল, বাতাসা ও মিষ্টি দিয়ে রমনা পার্কের প্রতিটি প্রবেশ গেটে দর্শনার্থীদের পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা জানানো হবে। তাছাড়াও বিনামূল্যে জনসাধারণের মাঝে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ করবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম, আবদুল বাতেন, মীর রেজাউল আলম, যুগ্ম কমিশনার শেখ নাজমুল আলম, রমনা বিভাগের উপ কমিশনার মো. মারুফ হোসেন সরদার, জনসংযোগ ও গণমাধ্যম শাখার উপকমিশনার মো. মাসুদুর রহমান, ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের উপকমিশনার এসএম মুরাদ আলিম সহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।