আমজাদ খান চৌধুরী, উন্নয়নমনস্ক এক সফল শিল্পনায়কের নাম। সেনাবাহিনীর পেশাদারী শৃঙ্খলা আর ব্যক্তিগত দূরদর্শিতা, এই দুইকে কাজে লাগিয়েছেন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে।
১৯৮১ সালে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড আর ১৯৮৫ সালে কৃষিভিত্তিক শিল্পবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে এদেশের শিল্প ভাবনায় নতুন এক প্রাণের সঞ্চার করেন।
বরাবরই তিনি পথ চলেছেন জীবনের শিক্ষা থেকে। নিজস্ব শিল্পপরিমন্ডলে আমজাদ খান চৌধুরী ছিলেন আর দশটা কর্মীর মতোই, বয়স যেখানে কখনোই দাঁড়াইনি বাধা হয়ে। প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখেছেন কর্মচঞ্চল মানুষের, তাই তার প্রতিটি উদ্যোগ মানেই বহু মানুষের কর্মক্ষেত্র।
তার শিল্পবাগানে তিনি দিনে দিনে বৈতনিক কর্মী হিসেবে যোগ করেছেন ৭২ হাজার মানুষকে। চুক্তির বন্ধনে এনেছেন ৮০ হাজার কৃষককে। দেশে বিদেশে তার কাজের সুফলভোগী বিশ লাখেরও বেশি মানুষ।
এদেশে কৃষিপণ্যকে শিল্পপণ্যে রূপ দেওয়ার সবচেয়ে বড় আয়োজক আমজাদ খান চৌধুরী। প্রচার আছে এদেশে মানুষ যা খায় ও নিত্যদিনে যা ব্যবহার করে তার সঙ্গে তার স্বপ্নের প্রাণের রয়েছে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।
এদেশে উৎপাদিত কৃষিপণ্যের সব ফল-ফসলকেই তিনি রূপ দিয়েছেন শিল্পে। এই শিল্পপণ্যের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দেড় হাজারেরও বেশি। কিন্তু এতসব কাজের পেছনেও প্রাণের মানুষ আমজাদ খান বরাবরই চেয়েছেন নিজেকে গৌণ করে রাখতে।
একেকটি স্বপ্ন দেখেছেন প্রবল আত্মবিশ্বাস নিয়ে। তার প্রাণের খাত ছিলো বাংলাদেশের দুগ্ধ শিল্প। তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন ২০২০ সালের মধ্যেই আমরা দুধে অর্জন করবো স্বয়ংসম্পূর্ণতা। বলেছিলেন ‘আমরা ২০২০ সালের মধ্যে দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবো। এজন্য শুধু দরকার সরকারি সহযোগিতা। সাহায্য নয় কিন্তু, সহযোগিতা। আমরা টাকা-টুকা চাইনা। সরকার যদি এদিকে সুনজর দেন, পলিসি লেভেলে কিছু পরিবর্তন আনেন তাহলেই তা সম্ভব।’
এত সব অপূর্ণ স্বপ্ন আর আয়োজন রেখেই অমোঘ নিয়মে তার চিরপ্রয়াণ। কিন্তু এদেশের প্রতিটি শহর, গ্রামে এমনকি পৃথিবীর দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়া শিল্প ও খাদ্যদ্রব্য সামগ্রীর মাঝে তিনি থেকে যাবেন অনন্তকাল।
আমজাদ খান চৌধুরী শুধুই একজন ব্যবসায়ী নয়, বরং সোশ্যাল কমিটেড পার্সন।