পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত রাঙামাটিতে ত্রাণ বিতরণে যাবার পথে আক্রমণের ঘটনা অবিশ্বাস্য লাগছে মন্তব্য করে এই ঘটনাকে দুঃস্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সংম্মেলেন বিএনপি মহাসচিব বলেন, এমন ভয়াবহ ঘটনা অবিশ্বাস্য লাগছে। আমাদের পর্যায়ে যদি এই আক্রমণ হয় তাহলে সাধারণ মানুষের অবস্থা কী, সেটা আপনারা বুঝে নিন।
সকালে রাঙামাটি যাবার পথে রাঙ্গুনিয়ার ইছাখালী এলাকায় মির্জা ফখরুলের গাড়িবহর হামলার শিকার হয়। এরপর তিনি রাঙামাটি না গিয়ে চট্টগ্রামে ফিরে এসে সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বর্ণনা দেন।
ফখরুল বলেন: ‘আমরা রাঙ্গুনিয়া থানা পার হয়ে গেছি। রাঙ্গুনিয়ার ইছাখালী বাজারে যেতে প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। হঠাৎ করে আমরা দেখলাম ৩০-৪০ যুবক লাঠিসোঁটা, হকিস্টিক, রামদা এবং পাথর নিয়ে আমাদের গাড়ি আক্রমণ করল। তারা অনবরত হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে গাড়ির কাঁচ ভেঙে ফেলে। শামীমের (কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান) মাথায় আঘাত করে। তার মাথা ফুলে গেছে। আমীর খসরু সাহেবের হাত রক্তাক্ত হয়েছে। রুহুল আলম চৌধুরী সাহেবের ঘাড়ে আঘাত লেগেছে। আমিও আঘাত পেয়েছি।’
তিনি বলেন, কার কী আঘাত লেগেছে, ব্যক্তিগতভাবে সেটা বড় কথা নয়।এই আঘাত গণতন্ত্রের প্রতি, বাংলাদেশের রাজনীতিতে মুক্তচিন্তা যারা করেন, যারা এই সরকারের খারাপ কাজগুলোর বিরোধিতা করেন এবং গণতন্ত্রের জন্য সোচ্চার হন তাদের প্রতি। এ আঘাত জাতীয়তাবাদী রাজনীতির ওপর।
ফখরুল বলেন, এই আঘাতের পর আজকে আওয়ামী লীগের চরিত্র আরও বেশি উন্মোচিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সব সময় গণতন্ত্রের কথা বলে। কিন্তু তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। সহনশীলতা বলতে তাদের মধ্যে কোনো কিছু নেই।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা তো সেখানে কোনো জনসভা করতে যাচ্ছিলাম না। দুর্গত পরিবারকে সাহায্য করতে যাচ্ছিলাম। সেই পথে এভাবে আক্রমণ, এটা আমাদের কাছে দুঃস্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। এটা অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে। গোটা দেশে সুস্থ চিন্তা ও মুক্তবুদ্ধির ওপর এ অবস্থা চলছে। এটা একটা ভয়াবহ ঘটনা। এর প্রতিবাদ করতে হবে। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে’।
আওয়ামী লীগের লোকজন হামলা করেছে দাবি করে ফখরুল বলেন, রাঙ্গুনিয়ার এমপির (হাছান মাহমুদ) ইন্ধন আছে কি না, সেটা আপনারা তদন্ত করে দেখবেন।
সেসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান রুহুল আলম চৌধুরী ও গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমানসহ কেন্দ্রীয় ও চট্টগ্রাম বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
আমীর খসরু মামুদ চৌধুরী বলেন, এতদিন আমরা রাজনৈতিক, সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। এখন অসহায় মানুষের মাঝে ত্রাণও বিতরণ করতে দিচ্ছে না সরকার। সময় এসেছে ফ্যাসিস্ট, সন্ত্রাসী এবং রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলদারদের সরাতে হবে।