শীর্ষ সন্ত্রাসী দাউদ ইব্রাহিম কাসকার ওরফে দাউদ ইব্রাহিম পাকিস্তানেই আছে বলে আবারো দাবি করে বেশকিছু তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করেছে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং ‘র’।
১৯৯৩ সালের ১২ মার্চ মুম্বাই স্টক এক্সচেঞ্জে সিরিজ বোমা হামলায় কমপক্ষে ৩১৫ জন লোক নিহতের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন দাউদ ইব্রাহিম। সেই ঘটনার পর থেকে তিনি পাকিস্তানে গা ঢাকা দিয়ে আছেন বলে ভারতের দাবি।
তবে ভারতের এমন অভিযোগ বরাবরই নাকচ করেছে পাকিস্তান। এবার এমন কিছু তথ্য-উপাত্ত ভারতের পক্ষ থেকে হাজির করা হয়েছে, যা দিয়ে ওই অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে বলে দাবি করছে দেশটি।
এসব তথ্য-প্রমাণের মথ্যে রয়েছে, দাউদের স্ত্রী মাহজাবিন শেখের নামে এ বছরের এপ্রিল মাসে করাচির ঠিকানার একটি টেলিফোন বিল এসেছে তাদের হাতে। পাওয়া গেছে দাউদের তিনটি পাকি পাসপোর্ট। এতে আলাদা আলাদা ঠিকানা রয়েছে। এর মধ্যে সব থেকে পুরনো পাসপোর্ট তৈরি হয়েছে ১৯৯৬ সালে।
করাচি থেকে দাউদের জন্য তৈরি সি-২৬৭১৮৫ নম্বরের পাসপোর্টটিতে নাম দেওয়া হয়েছে শেখ দাউদ হাসানের। বাকি দু’টি পাসপোর্টের মধ্যে একটিতে করাচির ঠিকানা রয়েছে। একটিতে রাওয়ালপিন্ডির।
১৯৯৩-র মুম্বই ধারাবাহিক বিস্ফোরণের মূল ষড়যন্ত্রকারী দাউদের শেষ যে ছবিটি গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে; তাতে দাউদের গোঁফ কামানো। মাথার চুলও পাতলা হয়ে এসেছে।
ভারতের গোয়েন্দারা বলছেন, চলতি বছরে করাচি থেকে দাউদ দুবাই গেছেন বলেও প্রমাণ পেয়েছেন তারা।
করাচিতেই ক্লিফটন এলাকার যে বাংলোয় তিনি থাকেন, তা ঘিরে রেখেছে আইএসআই এজেন্ট ও পাকিস্তানি রেঞ্জার্সরা। সব মিলিয়ে করাচিতে দাউদের দশটা বাড়ি রয়েছে।
ইসালামাবাদেও তার গোটা তিনেক বাড়ি রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে আইএসআই-এর একটি ‘সেফ হাউস’-ও।
ইসলামাবাদ অবশ্য বরাবরই দাবি করে এসেছে দাউদ পাকিস্তানে নেই। কিন্তু ভারতের গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, করাচিতেই ক্লিফটন এলাকার বাড়িতেই সপরিবারে রয়েছেন দাউদ।
দু’দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠক বাতিল হয়ে গিয়েছে ঠিকই; কিন্তু এই তথ্য পেশ করে ইসলামাবাদকে ফের কাঠগড়ায় তুলতে চাইছে নয়াদিল্লি।
এদিকে, দাউদ সম্পর্কিত খবর প্রকাশ্যে আসার পরই রাজনৈতিক মহলেও এ নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
কংগ্রেসের মুখপাত্র মনীশ তেওয়ারি বলেছেন, ‘এনডিএ বা আগের ইউপিএ সরকারের সবাই জানে দাউদ পাকিস্তানে লুকিয়ে আছে। এরকম অবস্থায় তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য শক্ত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
মনীশ আরো বলেন, ‘আমেরিকা যখন জানতে পেরেছিলো ওসামা বিন লাদেন পাকিস্তানে লুকিয়ে আছে, তারা কোনো সংবাদপত্রে তা প্রকাশ করেনি, বরং সেখানে গিয়েই তাকে হত্যা করেছে।’
তিনি বলেন, ‘দাউদ ভারতের ওসামা বিন লাদেন। পাকিস্তানে ঢুকেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
বিসিসিআই সচিব অনুরাগ ঠাকুরও স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন, দাউদকে আশ্রয় দেওয়া বন্ধ না করলে পাকিস্তানের সঙ্গে ক্রিকেট খেলবে না ভারত।
কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন এনডিএ জোটের শরিক শিবসেনা সরকারকে পরামর্শ দিয়ে বলেছে, যদি সাহস থাকে তাহলে পাকিস্তানে ঢুকে তাকে ধরে নিয়ে আসা হোক।