ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কমছে না। আজ বুধবার পাবনা ও মাদারীপুরে দুইজন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ঈদের পরদিন থেকে রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা আবারও বাড়ছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, জনগণকে সচেতন হয়ে নিজের বাড়িঘর এবং চারপাশ পরিষ্কার রেখে ডেঙ্গুর প্রকোপ মোকাবিলা করতে হবে।
বুধবার পাবনা জেনারেল হাসপাতালে মাহফুজ নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি পাবনা সদর উপজেলার চক রামানন্দপুর গ্রামে।
মাহফুজের স্বজনরা জানান, ভর্তি কোচিং করতে গিয়ে ঢাকায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয় মাহফুজ। ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসার পর অসুস্থ হয়ে পড়লে গতকাল মঙ্গলবার বিকালে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এছাড়াও মাদারীপুরের শিবচরে মারা গেছেন আব্দুল মজিদ (৭৫) নামে এক বৃদ্ধ। তিনি গত এক সপ্তাহ ধরে ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাকে শিবচরে নিয়ে আসা হয়। রাত ১টার দিকে তিনি মারা যান।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী ডেঙ্গুতে এ পর্যন্ত ৪০ জন মারা গেছেন। তবে বেসরকারি হিসাব অনুযায়ী ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
১৮ মাস বয়সী শিশু মেহরীমার ঈদের আনন্দ কেড়ে নিয়েছে ডেঙ্গু। সঙ্গে তার ৮ বছরের বোন মুনও ঈদের দিন থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত। দুই মেয়েকে নিয়ে লড়ে যাচ্ছেন মা।
মুনের মতো পাঁচ মাস বয়সী নাফিসাও ডেঙ্গু জ্বরে হাসাপাতালের বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছে। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১৪০ জন ভর্তি। বিএসএমএমইউ’র অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ২২ জন।
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন ৭৩ জন। এ নিয়ে ৪৪৮ জন ডেঙ্গু রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি। এদের মধ্যে শিশু রয়েছে ১৭০ জন।
চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারের পাশাপাশি জনগণকে আরও সচেতন হতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ১৮৮০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন।
রাজধানী ঢাকার সরকারি-বেসরকারিসহ সারাদেশের প্রায় ৪০টি হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭৫৪৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত। ১ জানুয়ারি থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৪৪ হাজার ৪৭১ জন।