চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

ডাকসু নির্বাচন: গঠনতন্ত্র পরিবর্তনের দাবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গঠনতন্ত্র পরিবর্তন, পরিমার্জন, সংশোধন ও সময়োপযোগী করার আলোচনা সভায় ডাকসুর প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার ভারসাম্যের দাবি জানিয়েছে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলো।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় এ দাবি জানানো হয়।

মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধনের জন্য পাঁচ সদস্যের গঠিত কমিটির আহ্বায়ক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান। এছাড়াও ডাকসুতে নতুন সম্পাদক পদ সৃষ্টি, নারী নেতৃত্ব তৈরি করার দাবিও তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে ঢাবি ভিসি সাংবাদিকদের বলেন: ৩১ মার্চের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে তারা কাজ করে যাচ্ছেন।

অধ্যাপক মিজানুর রহমান জানান, ‘‘আজকের মতবিনিময় সভায় ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে কয়েকটি প্রস্তাব এসেছে। তাদের প্রস্তাব গুলোর মধ্যে ‘ডাকসুর নতুন সম্পাদক পদ সৃষ্টি, ডাকসুর প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার ভারসাম্য ও নারী নেতৃত্ব তৈরি করা।’’

কারা প্রার্থী বা ভোটার হতে পারবেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এসব বিষয়ে ছাত্র সংগঠনগুলো তাদের প্রস্তাব দিয়েছে। এটির বিষয়ে ছাত্র সংগঠনগুলো আরো সুচিন্তিত মতামত দিবে বলে জানিয়েছে। আপাতত এ বিষয়ে আমরা (প্রশাসন) একটা অবস্থানে এসেছি। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত ছাত্র, তারাই প্রার্থী এবং ভোটার হতে পারবেন।

তবে, নিয়মিত ছাত্র বলতে কী বুঝায়? এ বিষয়ে তিনি বলেন দুই-একটি সংগঠনের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। তারা বলেছে, এ বিষয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা সাপেক্ষে তারা একমত হবেন।

‘ডাকসুর গঠনতন্ত্র পরিমার্জন, সংশোধন সম্পর্কে কিছু করণীয় আছে কিনা, তা নিয়ে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের সাথে আমাদের মতবিনিময় সভা ছিলো। এ সভার উদ্দেশ্যে ছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে তাদের মতামত গ্রহণ করা। বিদ্যমান গঠনতন্ত্র রয়েছে ডাকসুর। যা ১৯৯৮ সালে সংশোধন হয়েছিল। সেটি এর আগে আর সংশোধন করার প্রয়োজন হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে বদ্ধপরিকর এবং সেহেতু কীভাবে একটি সুন্দর নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে পারি, সে লক্ষ্যে গঠিত কমিটি কাজ করছে। এ কমিটিকে দশ কর্ম দিবসের মধ্যেই মতবিনিময় সভার প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা হয়েছে। বিদ্যমান গঠনতন্ত্রের কোথায় কোথায় সংশোধন করা দরকার, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট মতামত তারা দিয়েছে। তবে, তাদের মতামত গ্রহণের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। তাদের আগামী সোমবার (১৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যার মধ্যে লিখিত মতামত জমা দিতে বলা হয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে গঠনতন্ত্রের কী কী সংশোধন দরকার সে সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে দিতে পারবো বলে আশা করছি।’

মতবিনিময় সভা শেষে ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমরা বৈঠকে আমাদের প্রস্তাবনাগুলো তুলে ধরেছি। আমরা চাই সকল সংগঠন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক।’

ক্যাম্পাসে সহাবস্থানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পাসে সহাবস্থান আছে। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী তারা ক্যাম্পাসে আসছেন, ক্লাস করছেন, আড্ডা দিচ্ছেন। সাধারণ শিক্ষার্থীরা যদি তাদের মতাদর্শ গ্রহণ করে নেয় তাহলে তারা ক্যাম্পাসে আসতে পারবে, কেউতো তাদের বাধা দিচ্ছে না।’

ঢাবি ছাত্রদল সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার বলেন, ‘ক্যাম্পাসে সহাবস্থান নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আমরা আশা করি।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ ছাত্রদল নেতা বলেন, সহাবস্থান নিশ্চিত না হলে আমরা নির্বাচনে অংশ নাও নিতে পারি।

ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজীর বলেন, ‘ডাকসুর বর্তমান গঠনতন্ত্রে সভাপতিকে একচেটিয়া ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এতে পদাধিকার বলে সভাপতি (উপাচার্য) নির্বাচিত প্রতিনিধিকে বহিষ্কার করতে পারবে। তিনি যে বিষয়ে চাইবেন সে বিষয়ই আলোচিত হবে। আমরা বিষয়গুলোর পরিবর্তনে প্রস্তাবনা রেখেছি। পাশাপাশি যেহেতু দীর্ঘদিন নির্বাচন হয়নি তাই আমরা একটি নির্দিষ্ট সেশন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেয়ার বিষয়টি বলেছি।’