ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান।
তিনি বলেছেন, তদন্ত কমিটির দেয়া প্রতিবেদন দেখে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে গেট আটকে বিক্ষোভ শিক্ষার্থীরা। কার্যালয় এলাকা ঘিরে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৫শ’ সদস্য।
এরপর উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে তার বাসভবনের সামনে ছাত্রদল অবস্থান নিলেও কিছুক্ষণ অবস্থান ছেড়ে দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে তারা।
ছাত্রদল বাদে প্রতিদ্বন্দ্বী বাকি প্যানেলগুলো রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। তারা নির্বাচনকে লোকদেখানো, ভোট ডাকাতি এবং প্রহসন উল্লেখ করে পুনঃনির্বাচনের দাবি করছে। সেই সঙ্গে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করছে তারাও।
দুপুর ২টায় অধিকাংশ হলে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর উপাচার্য বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার সকাল ৮টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি হলে শুরু হয় ডাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এর মধ্যে সোমবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে ব্যালট পেপারে আগে থেকে সিল মারা থাকার কারণে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা ভোট বর্জন করে। এর ফলে কুয়েত মৈত্রী হলে ডাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার আগেই স্থগিত করা হয়।
এ ঘটনায় বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের প্রাধ্যক্ষ শবনম জাহানকে অপসারণ করে মাহবুবা নাসরীনকে নতুন প্রাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেয়ার পর বেলা ১১টা ১০ মিনিটে আবার ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যালট বাক্স পরীক্ষা করার দাবি জানায় সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থীরা। ব্যালট বাক্স পরীক্ষা করার দাবিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করার পর প্রায় আধঘণ্টার বেশি সময় হলে ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল। বেলা সোয়া ১১টার দিকে আবার ভোট শুরু হয়।
এরপর তিনটি ব্যালট বাক্স সরিয়ে রাখার অভিযোগ নিয়ে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলাকে কেন্দ্র করে বেলা ১২টার দিকে বেগম রোকেয়া হলে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেয়া হয়। এই বিশৃঙ্খলার মাঝে কোটা আন্দোলনকারী প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী নুরুল হক নূর মারধরের শিকার হন। তার অভিযোগ, ছাত্রলীগ প্যানেলের লোকজন তাকে আঘাত করেছে।
রোকেয়া হলের ভোট আবার বেলা ৩টায় শুরু হবে।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, প্রগতিশীল ছাত্র ঐক্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনের ব্যানারে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, স্বাধিকার এবং স্বতন্ত্র জোটের অরণি-শাফী প্যানেল ডাকসু নির্বাচন বর্জন করেছে। একই সাথে নির্বাচন আবারও অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছে তারা।
সোমবার দুপুর ১টায় মধুর ক্যান্টিনে প্রথমে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান প্রগতিশীল ছাত্রঐক্যের লিটন নন্দী। একই সাথে উপাচার্যের কার্যালয় সামনে আজ অবস্থান কর্মসূচি ও আগামীকাল ক্লাস বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
এরপর ছাত্রদলের পক্ষ থেকেও নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়া হয়।