চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

ঠিক এক মাস আগে কেমন আছে ফেভারিটরা

রাশিয়া বিশ্বকাপ শুরু হতে আর বাকি ঠিক এক মাস। এরইমধ্যে নিজেদের রণকৌশল ঠিক করে ফেলেছে অধিকাংশ দল। পরিকল্পনা ঠিক করলেও সবকিছুই কী ঠিকঠাক চলছে তাদের? দেখে নেয়া যাক কেমন আছে ফেভারিটরা, দলগুলোর হালহকিকতই বা কী…

দলের একনম্বর পছন্দের গোলকিপার ম্যানুয়েল নয়্যার। কিন্তু তাকে নিয়েই অনিশ্চয়তা রয়েছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জার্মানি। বিকল্প থাকলেও তাকে পেতে মরিয়া ‘কাইজাররা’।

গত সেপ্টেম্বর থেকে সাইডলাইনে ৩২ বছরের নয়্যার। অনুশীলনও ভালোভাবে করতে পারেননি। বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে কি ঘটবে তা নিয়ে চিন্তিত নয়্যার নিজেও। ‘ম্যাচ প্রাকটিস ছাড়া এমন একটা টুর্নামেন্টে যাওয়ার কথা আমি চিন্তাও করতে পারছি না’ -গত সপ্তাহে এভাবেই বলেছেন বায়ার্ন মিউনিখ তারকা।

নয়্যারের জায়গায় সেরা বিকল্প বার্সেলোনার গোলকিপার মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেন। তবে ২০১৪ শিরোপাজয়ী কোচ জোয়াকিম লো দলে ডাকতে পারেন বায়ার্নের আরেক গোলকিপার জোসুয়া কিমিচ, লিওন গোর্তেকা বা টিমো ওয়ের্নারকেও। গোলকিপার ছাড়া লোর জন্য ভালো খবর আছে মাঝমাঠেও। গত বিশ্বকাপ মিস করলেও এই আসরে ফিরতে পারেন মার্কো রিউস।

বিশ্বকাপের আগে সময়টা ভালো যাচ্ছে না জার্মানির। বাছাইপর্বের পর হওয়া কোনো প্রীতি ম্যাচেই জিততে পারেনি দলটি। ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, স্পেন এবং ব্রাজিলের বিপক্ষে জয়হীনই থাকতে হয়েছে। তবে আশা একটাই, বিশ্বের একনম্বর দলটি বিশ্বকাপ আসলেই যেন ভিন্নরূপ ফিরে পায়।

২০১৪ সালে ব্রাজিলের আশা ছিল নেইমারের কাঁধে। কিন্তু কলম্বিয়ার বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে জেতা ম্যাচে পিঠের ইনজুরিতে পড়েন নেইমার। সেই সঙ্গে সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে ডোবে ব্রাজিল।

ঘরের মাটিতে বিপর্যয়ের চার বছর পর আবারও নেইমারের দিকেই তাকিয়ে পাঁচবারের শিরোপাজয়ীরা। কিন্তু এবার টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই দলের প্রধান অস্ত্র নিয়ে শঙ্কায় হলুদ সমর্থকরা। পিএসজির হয়ে খেলার সময় গত ফেব্রুয়ারিতে ইনজুরিতে পড়েন নেইমার। যদিও ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন। বিশ্বকাপে ফিট নেইমারকে পাওয়া যাবে বলেই জানিয়েছেন তার ডাক্তার।

নেইমারের বিষয়ে সুখবর থাকলেও ব্রাজিলকে নতুন করে ভাবাচ্ছে তার পিএসজি সতীর্থ দানি আলভেজের ইনজুরি। হাঁটুতে আঘাত পেয়ে বিশ্বকাপের বাইরে চলে গেছেন বার্সেলোনার সাবেক তারকা। তারপরও ২০১৪’র চেয়ে টিটের অধীনে ভালো দলই পাবে ব্রাজিল।

বাছাইপর্বে দারুণ খেলেছে ব্রাজিল। দলের গভীরতার প্রমাণ দিয়েছে তারা। প্রথম দল হিসেবে রাশিয়া বিশ্বকাপের টিকিট কেটেছে। বাছাইপর্বের ধারা ধরে রাখতে পারলে ষষ্ঠ শিরোপার অন্যতম দাবিদার ব্রাজিলই!

ভিসেন্তে দেল বক্সের অধীনে সবশেষ দুটি বড় টুর্নামেন্টে খারাপ পারফরম্যান্সের পর আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে স্পেন। নতুন কোচ হুলেন লোপেতেগুই পুরোটাই পাল্টে দিয়েছেন স্প্যানিশদের। সাবেক এই গোলকিপার দায়িত্ব নেয়ার পর এখনো কোনো ম্যাচ হারেনি স্পেন। বাছাইপর্বে মাত্র দুটি পয়েন্ট হারিয়েছে। আর প্রীতি ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে তো ৬-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে।

গোলপোস্টের সামনে ডেভিড ডি গিয়া। তার সামনে সার্জিও রামোস ও জেরার্ড পিকের মিলে গড়েছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা ডিফেন্স দেয়াল। মাঝে মাঠে ডেভিড সিলভা, ইসকো এবং তাদের সঙ্গে ইনিয়েস্তার ঝড় সামলানোটা কঠিনই হবে প্রতিপক্ষের জন্য।পিকে

২০১৬ ইউরো ঘরের মাঠে শেষ কাজটা করতে পারেনি ফ্রান্স। ফাইনালে পর্তুগালের কাছে অতিরিক্ত সময়ে হার মানতে হয়েছিল তাদের। ফরাসিদের সেই দুঃখ ঢেকে দিতে বিশ্বকাপে দারুণ কিছু করার চাপ থাকছে কোচ দিদিয়ের দেশমের ওপর।

দেশমের দল কিছু অগ্রহণযোগ্য পারফরম্যান্স সত্ত্বেও বাছাইপর্ব উতরে গেছে। ঘরের মাঠে লুক্সেমবার্গের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করার পর ব্যাপক সমালোচনা হয় কোচের। সেই সমালোচনা থামাতে অবশ্যই ভালো কিছু করতে হবে ফরাসিদের।

সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে দিতে পারে ফ্রান্সের শক্তিশালী আক্রমণভাগ। যেখানে আছেন অ্যান্টনে গ্রিজম্যান, কাইলিয়ান এমবাপে, উসমান ডেম্বেলে ও পল পগবার মতো ফরোয়ার্ডরা।

২০১৪’র ফাইনালে হারের পর লিওনেল মেসির জন্য ট্রফিতে হাত ছোঁয়ানোর এটাই শেষ সুযোগ। বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচে ইকুয়েডরের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে অনেকটা একাই রাশিয়ার টিকিট পাইয়ে দিয়েছেন মেসি। কিন্তু দলে অনেক তারকা থাকলেও পারফরম্যান্সের ওঠা-নামার কারণে মেসি ছাড়া দলে জায়গা নিশ্চিত নয়। কোচ হোর্হে সাম্পাওলিও বলেছেন, ‘মেসি একাই দলকে টানতে পারে’।

কিন্তু বিশ্বকাপে ভালো কিছু করতে হলে সাম্পাওলিকে দলের জন্য সেরা ও নিখুঁত প্রতিভাগুলো খুঁজে পেতে হবে। সেজন্য সার্জিও আগুয়েরো এবং পাওলো দিবালার মতো খেলোয়াড়দের পরিচর্যা করার পরামর্শ বিশ্লেষকদের। কারণ মেসির সঙ্গে তাল মিলিয়ে আর্জেন্টিনাকে শেষ দাগে পৌঁছে দিতে পারেন তারাই।