চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

টেস্টের ‘কঠিন ময়দান’ নিয়ে তাসকিনের উপলব্ধি

চট্টগ্রাম থেকে: কে কখন বোলিং-ব্যাটিং করবে সেটা লিখে রাখা হয়েছে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের হোয়াইট বোর্ডে। তাসকিন আহমেদ যখন বল হাতে নিলেন, সাগরপাড়ের সাগরিকায় তখন প্রখর রোদ। ভ্যাপসা গরমে হাসফাস অনুশীলনের সবার মধ্যেই। প্রেসবক্স প্রান্ত থেকে লম্বা রানআপে ছুটে আসছেন তাসকিন। মধ্য মাঠের উইকেটে এই পেসারের বল খেলতে প্রস্তুত চোয়ালবদ্ধ সৌম্য সরকার। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের প্রস্তুতি বলে কথা। ‘বল টু বল’ মনোযোগ সবার মধ্যে।

তিন স্পেলে তাসকিন করলেন ১২ ওভার। পেসারদের জন্য টেস্ট খেলা কঠিন তো বটেই। অনুশীলনটাও যে কম কঠিন নয় সেটিই যেন স্পষ্ট হচ্ছিল প্রতি পদক্ষেপে। টেস্টে ওভারের হিসেব থাকে না। তবে কাকে কতটা কাজে লাগানো গেল সেটাই আসল কথা। বেশি বেশি বল করিয়ে সেকারণেই সব পেসারদের সামর্থ্য পরখ করছেন চণ্ডিকা হাথুরুসিংহে।

ফিট থাকতে সবার আগে চিনি বাদ দিন, প্রাকৃতিক ও নিরাপদ জিরোক্যাল-এর মিষ্টি স্বাদ নিন।

কিছুটা জ্বরজ্বর অনুভূতি ও শরীরে ব্যথা নিয়েই কোচের ফর্মুলা মেনে চললেন তাসকিন। ছুঁড়েছেন ৭২টি বল। বোলিং শেষে যখন ড্রেসিংরুমে ফিরছিলেন, টাইগার পেসারের জার্সি চুয়ে পড়া ঘাম ঝড়ে পড়ছিল তপ্ত ঘাস। ১০ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে টাইগার পেসার জানালেন, টেস্ট নিয়ে কিছু উপলব্ধির কথা। যে তাসকিন ওয়ানডের পর টেস্ট দলের সদস্য হতে মরিয়া ছিলেন, সেই তাসকিন এখন উপলব্ধি করছেন সাদা পোশাকের আঙিনা আসলে কতটা কঠিন।

‘টেস্ট ক্রিকেট কঠিন একটা জায়গা। সব কন্ডিশনেই কঠিন। কিন্তু আমাদের কন্ডিশনে পেসারদের জন্য কাজটা আরও কঠিন। এমন কন্ডিশনে ভালো করতে হলে অনেক ধৈর্য্য থাকতে হয়। আগ্রহের ব্যাপারও থাকে। আমরা সেভাবেই অনুশীলন করছি। প্রত্যেকটা সেশন, বল বাই বল ফোকাস করছি। যেভাবে যাচ্ছে, সামনের ম্যাচগুলোতে ভালো করতে পারব বলে আশা করি।’

গতির ঝড় তুলে বাংলাদেশ দলে তাসকিনের আবির্ভাব। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যে শুধু গতিতে চলে না, ছোট্ট এই ক্যারিয়ারে সেই উপলব্ধিও হয়েছে তাসকিনের। ভালোমানের পেসার হতে হলে কী করতে হবে, কী জানতে-শিখতে হবে, ডানহাতি এই পেসার ধরতে পারছেন সেটিও।

চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম দিনে কঠোর অনুশীলনে বাংলাদেশ দল

২২ বছরে তাসকিন প্রতিজ্ঞচিত্তে বললেন, ভালোমানের বোলার হতে শেখা শুরু করে দিয়েছিন, ‘বিশেষভাবে ধারাবাহিকভাবে একই জায়গায় বল ফেলা নিয়ে কাজ করছি। বল দুদিকেই ‍মুভ করা শিখছি। গতির সঙ্গে আপোস না করেই। আমি পেস বোলার, জোরে তো বল করতেই হবে। পেসটা ঠিক রেখেই অ্যাকুরিসি, লাইন-লেন্থ, সুইং শেখার চেষ্টা করছি। এটা অসম্ভব কিছু নয়। গতির সাথে এগুলো যদি উন্নতি করতে পারি, ভালোমানের বোলার হতে পারব। ভালোমানের বোলারদের সবকিছুই থাকতে হয়। আমার বিশ্বাস একদিন আমারও সবকিছু হবে।’

সাদা পোশাকে চারটি ম্যাচ খেলে পেলেছেন তাসকিন। সবকটিই দেশের বাইরে। নিউজিল্যান্ডে দুটি, বাকি দুটি শ্রীলঙ্কায়। অর্জন ৭ উইকেট। এবার ঘরের মাঠে টেস্ট খেলার সুযোগ। তাসকিনের মতে, এখানে ভালো করতে হলে রিভার্স সুইং জানা দরকার। সেটিও শেখার চেষ্টা আছেন।

ইংল্যান্ড সিরিজের মতো অস্ট্রেলিয়া সিরিজেও বানানো হবে স্পিন সহায়ক উইকেট। সেক্ষেত্রে একাদশে দুজনের বেশি পেসার খেলানোর সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তাসকিন কী সেই দুজনে এক হতে পারবেন? সেজন্য নিজের আত্মবিশ্বাস ও সামর্থ্যে উপর ভরসা রাখছেন এই পেসার।

‘আত্মবিশ্বাস আছে। বিশ্বাস করি সামর্থ্যও আছে আমার। যদিও টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা অনেক কম। যারা পারার তাদের সব কন্ডিশনেই পারতে হয়। আমাকে জানতে হবে কোন কন্ডিশনে কীভাবে বল করতে হয়। বোলিংয়ে ভ্যারিয়েশন আনতে অনেক কাজ করছি। কোচিং স্টাফরা সাহায্য করছে। সেই দুই বা একজনের মাঝে আমি থাকলে ভালো। আমাদের দলের সবারই সামর্থ্য আছে। কেবল এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি প্রত্যেকেই। কীভাবে বিশ্ব ক্রিকেটে আগের চেয়ে ভালো লড়াই করা যায়, সে চেষ্টাই কাজ করছে সবার মধ্যে।’

বিস্তারিত ভিডিওতে: