বিসিএলে রোববার দুম্যাচ মিলিয়ে সেঞ্চুরি হয়েছে তিনটি, আর আগেরদিনই দ্বিশতক হাঁকিয়ে বসে থাকা একজন তুলে নিয়েছেন ট্রিপল সেঞ্চুরি। সব ছাপিয়ে তাই ট্রিপলের দিকেই নজর সবার। নজর আসলে তামিম ইকবালের দিকে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ট্রিপল ছুঁয়ে পাকিস্তান টেস্টের প্রস্তুতি সেরেছেন টাইগার বাঁহাতি।
তিন ভাগের সিরিজে দ্বিতীয় ধাপে একটি টেস্ট খেলতে মঙ্গলবার পাকিস্তান রওনা দেবে বাংলাদেশ দল। তার আগে বিসিএলের প্রথম রাউন্ডে নেমেছেন স্কোয়াডে থাকা সকলেই। তামিম ট্রিপল করেছেন, তার ইস্ট জোন সতীর্থ মুমিনুল শনিবার করেছেন সেঞ্চুরি। আরেক ম্যাচে এদিন চট্টগ্রামে মাহমুদউল্লাহ শতক পেয়েছেন টি-টুয়েন্টি মেজাজে, ৭০ বলে। বন্দরনগরীতে সেঞ্চুরি পাওয়া বাকি দুজন, শাহরিয়ার নাফীস ও শামসুর রহমান শুভ অবশ্য জাতীয় দল স্কোয়াডে নেই।
শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে আগেরদিনের ২২২ নিয়ে ক্রিজে এসেছিলেন তামিম। ফিরেছেন ৩৩৪ করে। এই ফেরা আবার আউট হয়ে ফেরা নয়, দল ইনিংস ঘোষণা করায় অপরাজিত থেকে ফিরেছেন সাজঘরে।
তার আগে টাইগার ক্রিকেটে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রথম শ্রেণিতে ট্রিপল সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েছেন। সেটাকে টেনে নিয়েছেন প্রথম শ্রেণিতে দেশের সর্বোচ্চ সংগ্রহতে। সেন্ট্রাল জোনের বিপক্ষে ইস্ট জোনের এ ওপেনার ৪০৭ বলে পূর্ণ করেন তিনশ রান। পথে ছিল ৪০টি চারের মার।
ট্রিপলের মাইলফলক পা রেখে নিজের ইনিংসের প্রথম ছক্কাটি হাঁকান তামিম। পরে মেরেছেন আরও দুটি। দলীয় সংগ্রহ সাড়ে পাঁচশ পেরিয়ে যাওয়ায় অধিনায়ক মুমিনুল ইনিংস ঘোষণা করে দেন, তাতে বাঁহাতি ওপেনারের আগ্রাসী মেজাজ দীর্ঘ হয়নি। ৩৩৪ রানে অপরাজিত থেকে যান তামিম। ৪২৬ বলে ৪২ চার ও ৩ ছক্কার মহাকীর্তি। একইদিনে নাম লিখিয়েছেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৭ হাজার রানের ক্লাবেও।
বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ তথা বিসিএলে অবশ্য এটিই প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরি। আগে জাতীয় ক্রিকেট লিগের ২০০৬-০৭ মৌসুমে দেশের হয়ে প্রথম ট্রিপল এনেছিলেন রকিবুল হাসান। ফতুল্লায় বরিশালের হয়ে সিলেটের বিপক্ষে ৬০৯ বলে ৩১৩ রানের ম্যারাথন ইনিংস খেলেছিলেন এ ডানহাতি। মিরপুরে শুভাগতের বল মিড উইকেটে ঠেলে তামিম যখন পৌঁছে গেলেন মাইলফলকে, তখন ফিল্ডিং দলে রকিবুল, এগিয়ে আসেন তামিমকে অভিনন্দন জানাতে।
তামিমের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ইস্ট জোন ৫৫৫-এ যায় কেবল ২ উইকেট হারিয়ে। ম্যাচের তৃতীয় দিনে প্রথম ইনিংসে লিড তাদের ৩৪২ রানের। সেন্ট্রাল জোনকে ২১৩ রানে অলআউট করে ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল তারা। সেন্ট্রালরা ৩ উইকেটে ১১৫ তুলে তৃতীয় দিন শেষ করেছে। চতুর্থদিনে ম্যাচ বাঁচাতে তাদের সম্বল হাতে থাকা ৭ উইকেট।
সেন্ট্রালের প্রথম তিন ব্যাটসম্যানই আছেন পাকিস্তান সিরিজের স্কোয়াডে। যার একজন সৌম্য সরকার ব্যর্থ, ফিরেছেন ৭ রানে। আরেকজন সাইফ হাসান প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ফিফটি, দ্বিতীয় ইনিংসে ফিরেছেন ৩৩ তুলে। অপরজন নাজমুল হোসেন শান্ত, ৫৪ করে দিনের একেবারে শেষভাগে আউট হন।
রকিবুল হাসান ১৬ ও শহিদুল ইসলাম ৭ রানে শেষদিনের লড়াই শুরু করবেন। সেন্ট্রালের উইকেটের দুটি নিয়েছেন নাঈম হাসান, অপরটি আবু জায়েদ রাহির।