ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে জামিন আবেদন করার অনুমতি দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আগামী সপ্তাহের রোববার বা সোমবার এ জামিন আবেদনের শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন মোয়াজ্জেমের আইনজীবী।
বিচারপতি মো. মইনুল ইসলাম ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিন আবেদনের করার অনুমতি দিয়ে আদেশ দেন। এর আগে হাইকোর্টের এই বেঞ্চে মোয়াজ্জেমের পক্ষ থেকে জামিন আবেদন করার অনুমতি চাওয়া হয়।
আদালতে মোয়াজ্জেম হোসেনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আহসান উল্লাহ ও আইনজীবী সালমা সুলতানা। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল গাজী মামুনুর রশীদ।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা এই মামলায় সাইবার ট্রাইব্যুনাল ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের জামিন আবেদন খারিজ করেন। সেই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে এসে জামিন আবেদন করেন মোয়াজ্জেম।
এর আগে আগাম জামিনের আবেদন শুনানির অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন মোয়াজ্জেম। এরপর অতিগোপনে গত ১৬ জুন হাইকোর্টে এসেছিলেন তিনি। তবে ওইদিনই তাকে হাইকোর্ট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর তাকে সাইবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে তার মা ২৭ মার্চ থানায় অভিযোগ দাখিল করেন। এরপর ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন নুসরাতকে থানায় ডেকে নিয়ে তার জবানবন্দী রেকর্ড করেন এবং তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেন।
পরবর্তীতে গত ৬ এপ্রিল নুসরাতে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১০ এপ্রিল মারা যান নুসরাত। এ ঘটনায় পৃথক একটি মামলায় তদন্ত শেষে ১৬ জনের বিরুদ্ধে ২৯ মে ফেনীর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন(পিবিআই)।
আর নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনার পরই নুসরাতের জবানবন্দীর(ওসির কাছে দেওয়া) বিষয়টি সকলের সামনে আসে। এ অবস্থায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে গত ১৫ এপ্রিল মামলা করেন।
ট্রাইব্যুনাল বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেয়। এই নির্দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৬, ২৯ ও ৩১ নম্বর ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয় ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে।
এই প্রতিবেদন পাবার পর গত ২৭ মে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এরপর পলাতক অবস্থায় আগাম জামিনের জন্য সে হাইকোর্টে আসে। পরে হাইকোর্ট এলাকা থেকে তিনি গ্রেপ্তার হন।