জামায়াত ইস্যুতে অনড় থেকে রাত ৮টার দিকে জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় চায়ের আমন্ত্রণে যোগ দিয়ে বৈঠক করেছেন কাদের সিদ্দিকী ও তার দল কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ।
এর আগে দল দুটির দায়িত্বশীল একাধিক নেতা বৈঠকটির সাফল্যের বিষয়ে আশা প্রকাশ করেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত জামায়াতে বিষয়ে কাদের সিদ্দিকীর অনড় এবং বিএনপি’র অাগের অবস্থাননের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়েছে খালেদা- কাদের সিদ্দিকী’র বৈঠক। এর ফলে ২০ দলীয় জোট থেকে জামায়াতকে বাদ দেয়ার বিষয়ে ধোঁয়াশাই থেকে গেছে।
জামায়াতের সঙ্গে কোনভাবেই রাজনীতি নয়, এমন সিদ্ধান্তে অনড় থেকে দীর্ঘ বৈঠক শেষ করেছেন কাদের সিদ্দিকী। তিনি বলেন, জামায়াতের সাথে রাজনীতি নয়। বৈঠক বিষয়ে বিস্তারিত আগামীকাল শুক্রবার সাড়ে ১১টায় দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানো হবে।
অন্যদিকে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় ঐক্যের অগ্রগতির বিষয়ে বিস্তারিত কিছু না জানিয়ে বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার জাতীয় ঐক্যের ডাকে সাড়া দিয়ে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বৈঠকে অংশ গ্রহণ করে একান্ত আলাপচারিতা করেছেন।
বৈঠকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজউদ্দিন আহমেদ ও আবদুল্লাহ আল নোমান উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী ও দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য নাসরিন সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বীর প্রতিক, সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী ও শফিকুল ইসলাম।
গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে গত ১ জুলাই জঙ্গিদের হামলায় ১৭ বিদেশিসহ ২২ জন নিহত হওয়ার পর উগ্রবাদ মোকাবেলায় দলমত নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্য গড়তে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন খালেদা। তবে আওয়ামী লীগ বিএনপি-জামায়াতকে জঙ্গি মদদ দেওয়ার জন্য দায়ী করে সেই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করলে অন্য দল ও সুশীল সমাজকে সাথে নিয়ে খালেদা জিয়ার ডাকে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে তৎপরতা শুরু করে তার দল বিএনপি।
বিএনপি ও দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে বর্তমান সংকট উত্তরণে করণীয় কী-এ বিষয়ে আলোচনা করা হয় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণফোরাম, বিকল্পধারা বাংলাদেশ এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সঙ্গে।
এর অংশ হিসেবে গত ২৬ জুলাই মঙ্গলবার কাদের সিদ্দিকীর মোহাম্মদপুর বাবর রোডের বাসায় ফখরুল ও নোমানের সঙ্গে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেসময় কাদের সিদ্দিকী জামায়াতের সঙ্গে থাকলে রাজনীতিতো দূরের কথা বেহেশতে যেতেও আপত্তি তোলেন। এছাড়া বিএনপি সমর্থিত একাধিক বুদ্ধিজীবিও জামায়াতকে ২০ দলের জোট থেকে বাদ দেয়ার পক্ষে মতামত দেন। এরই ধারাবাহিকতায় জায়ামাত ও জাতীয় ঐক্যের বিষয়ে বিএনপি’র চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার আমন্ত্রণে তার বাসভবনে বৈঠকে বসেন কৃষক শ্রমিক জনাতা লীগে সভাপতি কাদের সিদ্দিকী।
এ বিষয়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বীর প্রতিক চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, শুধু জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস নয় বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় অনেক বিষয়েই ঐকমত্য প্রয়োজন। মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ বিরোধী কারো সাথে আমাদের কোন ঐক্য হতে পারে না। বিএনপি জামাতের সঙ্গ ত্যাগ না করলে তাদের সাথেও কোন ঐক্য নয়।