চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকারকেই মূল ভূমিকা পালন করতে হবে: আ জ ম নাছির

জলাবদ্ধতা নিরসন এক দিনের ব্যাপার নয়,সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এই জলাবদ্ধতা বেড়েই চলেছে। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য সরকারকেই মূল ভূমিকা পালন করতে হবে,এটা সিটি করপোরেশনের কাজ নয়। নগরীর জলাবদ্ধতা ও সড়কের বেহাল দশা নিয়ে সকালে নগর ভবনে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন এক  সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

এসময়  সিটি মেয়র আরো বলেন, যেহেতু নগরবাসী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেহেতু নগরবাসীর প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে।  সে কারণেই নিজ দায়িত্বে উদ্যোগটা আমরা নিয়েছি। আমরা আমাদের সাধ্য মত চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা প্রকল্পের বাইরে কিছু করতে পারিনা। আমরা প্রকল্প নিচ্ছি তবে পর্যায়ক্রমে গর্ত বেড়ে যাওয়ায় আমাদের কাজ করতে কষ্ট হচ্ছে। এক কাজ বার বার করতে হচ্ছে । এর পরও যদি কেউ বলেন কাজ করছি না, তাহলে তা হবে মিথ্যা অপবাদ দেয়া।

মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে টানা বর্ষণে এবং ব্যাপক পাহাড়ী ঢলে চট্টগ্রামে ৫টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। শনিবার রাত থেকে হওয়া ভারি বৃষ্টির প্রভাবে সোমবার দুপুর পর্যন্ত চট্টগ্রাম মহানগর ও আশেপাশের কয়েকটি উপজেলার জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। দুর্যোগপূর্ণ এইআবহাওয়ার কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের বর্হিনোঙরে ৩৫টি জাহাজের পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে।জলাবদ্ধতা

চট্রগ্রাম আবহাওয়া অফিস সোমবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ১২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। এর আগে রোববার সকাল ৬টা থেকে সোমবার ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় আমবাগান আবহাওয়া অফিসে ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। সে হিসেবে রোববার সকাল থেকে সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত নগরীতে মোট  ১৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

নগরীর জিইসি মোড়, দুই নম্বর গেইট, প্রবর্তক মোড়, মেহেদীবাগ আগ্রাবাদ এক্সেস সড়ক, বড়পোল মোড়, সিডিএ আবাসিক এলাকা, পোর্ট কলোনির কয়েকটি সড়ক, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা, বহদ্দারহাট মোড়, বহদ্দার বাড়ি সড়ক, হালিশহর, পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

জলাবদ্ধতার কারণে নগরীর এইসব এলাকায় সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। আবার কোনো কোনো স্থানে যানবাহনের সঙ্কটের কারণে ভোগান্তিতে পড়েন অফিসগামী ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ নগরবাসী।

এর আগেও চলতি মৌসুমে বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর কয়েক দফা তলিয়ে যায় চট্টগ্রাম নগরী।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নগরীর বিভিন্ন নালার পানি ধারণ ক্ষমতা কমে যাওয়ার পাশাপাশি আগ্রাবাদ ও হালিশহর এলাকার বাসিন্দারা তাদের এলাকায় জলাবদ্ধতার জন্য মহেশখালের উপর দেওয়া বাঁধকে দায়ী করেন। মহেশখালের ওই পথ দিয়ে এসব এলাকার পানি কর্ণফুলী নদী হয়ে সাগরে যায়।

নগরবাসীর অভিযোগের মুখে গত ১৩ জুন বাঁধটি অপসারণ কাজ শুরু করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বাঁধ অপসারণের পর এখন জোয়ারের সময় বৃষ্টি হলে পানি নামতে না পারায় এসব এলাকার রাস্তায় পানি জমে থাকে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বার্তায় বলা হয়েছে, মৌসুমী বায়ুর ফলে ভারতের রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে আসাম এর উপর দিয়ে এ বৃষ্টি আরও তিন-চারদিন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুসারে, চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ স্থানে অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে।