জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্ব হুমকির মুখে বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘের জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, আমাদের পৃথিবী এখন চরম বিপর্যয়ে পতনের সন্ধিক্ষণে আছে।
পোল্যান্ডে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের (কনফারেন্স অব পার্টিস-কপ২৪) একদিন আগে এ কথা জানিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার তাগিদ দিয়েছেন তারা।
সম্মেলনের আগের দিন বিশ্বের চার সাবেক অভিজ্ঞ রাজনীতিক জাতিসংঘ-অর্থায়নে আয়োজিত এই বিশেষ আলোচনায় অংশ নেন। জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্তের আহ্বান জানাতেই এই বৈঠক।
সম্মেলনের নির্ধারিত দিনের আগেই আলোচনা শুরু করার ঘটনা জলবায়ু সম্মেলনের ইতিহাসে বিরল। কিন্তু এবার পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে, সিদ্ধান্ত নিতে যত দেরি করা হবে, তত বেশি ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাবে।
এজন্যই ফিজির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফ্র্যাংক বাইনিমারামা, মরক্কোর সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালাহেদ্দিন মেজোয়ার, ফ্রান্সের সাবেক প্রধানমন্ত্রী লরেন্ট ফাবিয়াস এবং পেরুর সাবেক পরিবেশমন্ত্রী মানুয়েল পুলগার ভিদাল – জলবায়ু পরিবর্তন সীমিতকরণ নিয়ে কাজ করা জাতিসংঘের এই চার বৈঠক সভাপতি এ নিয়ে আলোচনায় বসেন।
২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তির পর পোল্যান্ডের কাটোউইসের এই বৈঠকই জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে সবচেয়ে গুরুতর আলোচনা বলে জানিয়েছে বিবিসি।
বৈঠক শেষে দেয়া বিবৃতিতে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি মেনে চলার আহ্বান জানান জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা। বলেন, এর আগে সিদ্ধান্ত হয়েছিল বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখার জন্য গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের মাত্রা ২০৩০ সালের মধ্যে ৪৫ শতাংশের মধ্যে কমিয়ে আনতে হবে। নইলে মহাবিপর্যয় নেমে আসবে গোটা বিশ্বে।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, কার্বন নিঃসরণের মাত্রা গত চার বছরের তুলনায় বেড়ে গেছে। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের জলবায়ু বিশেষজ্ঞ দল। বলেছেন, জরুরি ভিত্তিতে এই নিঃসরণ কমাতে হবে।
এদিকে বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রতিবাদ জানিয়ে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে বিক্ষোভ করেছে হাজার হাজার মানুষ। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় তারা প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারের দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে দেশগুলোকে সাহায্য করার জন্য আগামী পাঁচ বছরে ২শ’ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।