দেশের জনগণের খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘মনে রাখতে হবে জনগণ বাঁচলে দেশ বাঁচবে। তাই জনগণের খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টিই প্রথম।’
আমসহ অন্যান্য ফলে ক্ষতিকর রাসায়নিকের প্রয়োগ ঠেকানো সংক্রান্ত রিট শুনানির একপর্যায়ে রোববার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
এরপর আদালত মৌসুমি ফলে ক্ষতিকর রাসায়নিকের প্রয়োগ হয় কি না, তা পরীক্ষা করে দুইমাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বিএসটিআইসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দেন।
এছাড়া ফলে রাসায়নিকের পরীক্ষার জন্য দেশের বন্দরগুলোতে ‘কেমিকেল টেস্টিং ইউনিট’ স্থাপনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন আদালত। এবং ইউনিট স্থাপন বাস্তবায়ন করে তিনমাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়।
শুনানিকালে আদালত ফল উৎপাদন ও বাজারজাতের সাথে জড়িতদের সতর্ক করে বলেছেন, ‘ফলে রাসায়নিকের প্রয়োগ ঠেকাতে প্রয়োজনে আমাদের বিশেষ ক্ষমতা আইনের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান প্রয়োগের কথা ভাবতে হবে। কারণ, জনগণের খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি প্রথম। মনে রাখবেন, জনগণ বাঁচলে দেশ বাঁচবে। জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। আর বিএসটিআই’র পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সরকার এম আর হাসান।
এর আগে ক্ষতিকর রাসায়নিকের প্রয়োগ রোধে হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের করা একটি রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০১২ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি রায় দেয়। সেই সাথে এ রিট মামলাটি চলমান রাখা হয়।
এরপর এবারের আমের মৌসুম সামনে রেখে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের ওই রিটে একটি আবেদন করার পর গত ৯ এপ্রিল ক্ষতিকর রাসায়নিকের প্রয়োগ ঠেকাতে রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বড় আম বাগানগুলোতে পুলিশ মোতায়েনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
পাশাপাশি ফলের বাজার ও আড়তগুলোতে আমসহ অন্যান্য ফলে রাসায়নিকের প্রয়োগ ঠেকাতে নজরদারী কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়া হয় এবং সে বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। সে অনুযায়ী বিএসটিআই এবং সরকারের পক্ষ থেকে দুইটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয় আদালতে। বিএসটিআই’র প্রতিবেদনে বলা হয়, তারা ৪০টি দোকান থেকে ১০ টি ফলের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করেছেন। কিন্তু তাতে ফরমালিনের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।