শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন থাকায় দেশের বিভিন্ন সড়ক কিংবা মহাসড়কে যানজট বা ভোগান্তি সাধারণত কম থাকে। কিন্তু ছুটির দিনেও যেন সড়কে মৃ্ত্যুর মিছিল থামছে না! আজ ঢাকার সাভার, কিশোরগঞ্জের কামালিয়ার চর এবং নোয়াখালীর সেনবাগে সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ জন নিহত হয়েছেন। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ।
চ্যানেল আই অনলাইনের প্রতিবেদনে জানা যায়: সাভারে সড়ক দুর্ঘটনায় তিন জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ছাগল বোঝাই একটি ট্রাক সাভারের জোর পুল এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের পাশে একটি পুকুরে পড়ে গেলে পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল পুকুরে তল্লাশি চালিয়ে দু’জনের মরদেহ উদ্ধার করে। এছাড়া সাভারের বলিয়ারপুর এলাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় অজ্ঞাত এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
কিশোরগঞ্জে পৃথক দু’টি সড়ক দুর্ঘটনায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের এক স্টাফ নার্সসহ দুই জন নিহত হয়েছেন। তারা হলেন: ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স জিন্নাত খান ও সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ফয়জুল ইসলাম চৌধুরী। এই দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়: কামালিয়ারচর এলাকায় ময়মনসিংহগামী বিশাল পরিবহনের একটি বাস আরেকটি ট্রাককে সাইড দিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে একটি গাছের সাথে ধাক্কা লেগে খাদে পড়ে যায়। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। এছাড়া একই এলাকায় কয়েকশ’ গজের মধ্যে কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী যাতায়াত পরিবহনের সাথে একটি ট্যাংকলড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
অন্যদিকে নোয়াখালীর সেনবাগে ট্রাক্টর-সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষে এক গৃহবধূ নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন।
তিন জেলার কয়েকটি দুর্ঘটনার খবর গণমাধ্যমে এসেছে। প্রতিদিন এমন আরও বহু দুর্ঘটনার শিকার হয়ে অনেক মানুষ মারা যান, যেগুলোর খবর সংবাদমাধ্যমে আসে না। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, সড়কে এত মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও তা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে তেমন কোনো পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায় না। অথচ একটু সচেতন হলেই দুর্ঘটনার সংখ্যা কমিয়ে আনা সম্ভব।
ছুটির দিনেই যদি একাধিক দুর্ঘটনায় এত মানুষ মারা যান, তাহলে প্রতিদিন দুর্ঘটনা এবং মৃত্যুর হার কেমন হতে পারে তা সহজেই উপলব্ধি করা যায়। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জরিপও এমন ভয়াবহ অবস্থারই জানান দেয়। এসব বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্টদের ভাবতে হবে।
নিরাপদ সড়ক নিয়ে কাজ যে একেবারে হচ্ছে না, তাও নয়। তবে এ নিয়ে আরও ব্যাপকভাবে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। সড়কে নিয়ম মানা এবং না মানলে কঠোর আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষের সচেতনতার বিকল্প নেই দুর্ঘটনা কমানোর ক্ষেত্রে। এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।