রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে টালমাটাল গোটা বিশ্ব। ইউক্রেনীয়দের উপর রাশিয়ানদের সামরিক আগ্রাসন ভালো ভাবে নেয়নি ইউরোপ। চেলসি মালিক রোমান আব্রমোভিচের সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের। তাই ভক্ত ও সংবাদ মাধ্যমের রোষানলে পড়তে হচ্ছে ক্লাবের দায়িত্ব ছেড়ে দেয়া নিয়ে। অবশেষে ক্লাব বিক্রির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন এই রুশ ধনকুবের।
ইউক্রেনীয়দের উপর সামরিক আগ্রাসনের পর আব্রমোভিচের উপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। গণমাধ্যমেও ক্লাব বিক্রি করা নিয়ে হয় তীব্র সমালোচনা। যে কারণে তীব্র সমালোচনার মুখে বাধ্য হন ক্লাবটি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিতে। চেলসির অফিসিয়াল পেইজে দীর্ঘ চিঠি দিয়ে ভক্ত সমর্থকদের নিশ্চিত করেছে আব্রামোভিচ।
তিনি লিখেছেন, ‘চেলসির মালিকানায় থাকা নিয়ে গত কদিন ধরে মিডিয়ায় হওয়া জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটাতে চাই। আমি সব সময় ক্লাবকে প্রাধান্য দিয়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে ক্লাবের কথা ভেবে আমি ক্লাব বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার মনে হয় এতে ক্লাবের ভক্ত কর্মচারীদের পাশাপাশি স্পন্সর পেতে সাহায্য করবে।’
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের অন্যতম দল চেলসি তার অধীনে দারুণ সময় পার করেছে। তাই বিদায় বেলা চেলসি সমর্থকদের কথা ভেবে ক্লাব বিক্রির সমস্ত অর্থ দান করে গেছেন ইউক্রেন যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য।
সে প্রসঙ্গে আব্রমোভিচ চিঠিতে বলেন, ‘আমি ব্যবসায়িক স্বার্থে ক্লাবকে ব্যবহার করিনি। ক্লাবের সাঙ্গে আমার আবেগ জড়িত ছিল। তাই ক্লাব বিক্রি করে ঋণ শোধ করার পরিকল্পনা নেই। আমি চেলসিকে একটি দাতব্য ফাউন্ডেশন স্থাপন করার নির্দেশ দিয়েছি। ক্লাব বিক্রির সমস্ত আয় দান করা হবে। এই ফাউন্ডেশনটি ইউক্রেনে যুদ্ধের শিকার সকলকে সাহায্য করবে। যার মধ্যে রয়েছে ক্ষতিগ্রস্তদের জরুরি ও তাৎক্ষণিক সেবা দান। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ তহবিল প্রদানের পাশাপাশি পুনরুদ্ধারের দীর্ঘমেয়াদী কাজকে সমর্থন করা।’
এর আগে ২০০৩ সালে ১৪০ মিলিয়ন পাউন্ডে ক্লাবের মালিকানায় এসেছিলেন রাশিয়ান আব্রামোভিচ। দায়িত্ব নিয়ে ক্লাবকে নানা সাফল্য এনে দিয়েছেন এই ধনকুবের। পাঁচটি ইপিএল শিরোপার পাশাপাশি তার নেতৃত্বে দুই বার চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতেছে চেলসি। তাই বিদায় বেলায় ২ বিলিয়ন ডলার শোধ না নিয়েই চেলসি ছেড়ে আত্মত্যাগের ইতিহাস গড়লেন আব্রামোভিচ।
আবেগঘন ওই চিঠিতে তিনি বলেন, ‘আপনারা জেনে রাখুন চেলসি থেকে সরে আসা আমার জন্য কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল। ক্লাব থেকে বিদায় নেওয়া আমাকে কষ্ট দেয়। তবে, আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি ক্লাবের সর্বোত্তম স্বার্থের কথা মাথায় রেখে। আমি আশা করি শেষবারের মতো স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে গিয়ে আপনাদের সবাইকে ব্যক্তিগতভাবে বিদায় জানাতে পারব। চেলসি এফসি-এর অংশ হতে পারাটা সারাজীবনের জন্য সৌভাগ্যের বিষয়। দীর্ঘ পথ চলায় চেলসির সাফল্যে আমি গর্বিত। চেলসি ও ক্লাবটির সমর্থকরা সবসময় আমার হৃদয়ে থাকবে।’