এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
১৬০ টাকা কেজিতে কিছুদিন আগেও বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচ সপ্তাহের ব্যবধানে ৮০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। এছাড়া বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি, ডিম ও মাংস।
রোববার রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউনহল, কাটাসুর, হাতিরপুল, রামপুরা, সেগুনবাগিচাসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে, সেখানকার ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে বাজারের এ চিত্র পাওয়া গেছে।
হাতিরপুল বাজারে সবজি বিক্রেতা কবির হোসেন বলছেন: উৎপাদন কম হওয়ায়, সেই সঙ্গে সরবরাহে ঘাটতির কারণে বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। কিছুদিন আগের বৃষ্টিতে মরিচ গাছের গোড়া পচে গেছে। আবার এখন খরার কারণে গাছগুলো মারা যাচ্ছে। তাই বাজারের এ অবস্থা। গত তিন সপ্তাহ ধরে কাঁচামরিচের বাজার অস্থির। ৮০ থেকে ১০০ টাকার মরিচ এখন ২৪০ টাকা হচ্ছে।
মাত্রাতিরিক্ত দামের কারণে বাজারে মরিচের বিক্রি কমেছে বলে দাবি করলেন কবির হোসেন।
তবে আশার খবর হচ্ছে: দীর্ঘ ছয় মাস বন্ধ থাকার পর শুক্রবার থেকে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু হয়েছে। কাঁচা মরিচ আমদানির খবরে বন্দর এলাকায় দাম কমে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে এর প্রভাব ঢাকার বাজার পড়বে দু-একদিনের মধ্যে।
রোববার ব্রয়লার মুরগি ২১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহেও একই দরে বিক্রি হয়েছিল। বাজারগুলোতে সোনালি ৩৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি হাইব্রিড ৩৩০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৫০ থেকে ৬৮০ টাকা কেজি, লেয়ার মুরগি ৩৪০ টাকা এবং সাদা লেয়ার ৩১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজির বাজারে দেখা গেছে: বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। আদা বা রসুন ২২০ থেকে ২৪০ টাকার কমে মিলছে না। আলুর কেজি গত সপ্তাহে ৫০ টাকা থাকলেও তা বেড়ে ৫৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এছাড়া, বাজারগুলোতে গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখীর কেজি ১২০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকায়, শসা ৬০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, সজনে ১৬০ টাকা এবং কাঁচা আম প্রকারভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৬৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, গরুর কলিজা ৭৮০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ডিমের বাজারে দেখা গেছে, এক হালি ডিম ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৪৫ টাকা। আর তিন সপ্তাহ আগে ছিল ৪০ টাকা। দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
মাছ-মাংসের বাজার
বাজারগুলোতে ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকা। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশের কেজি ১ হাজার ৮০০ টাকা। প্রতি কেজি চাষের শিং (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, রুই (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, মাগুর ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, মৃগেল ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, পাঙাশ ২১০ থেকে ২৩০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা, বোয়াল ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা, কাতলা ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, পোয়া ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২২০ থেকে ২৪০ টাকা, মলা ৫০০ টাকা।
এছাড়া, বাতাসি টেংরা ১ হাজার ৬০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি ৬০০ টাকা, পাঁচমিশালি ২২০ টাকা, রূপচাঁদা ১ হাজার ২০০ টাকা, বাইম ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, দেশি কই ১ হাজার ২০০ টাকা, মেনি ৭০০ টাকা, শোল ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা, আইড় ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা, বেলে ৭০০ টাকা এবং কাইক্কা মাছ ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাংসের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে গরুর মাংসের দাম। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা। খাসির মাংস প্রতি কেজি ১০০০ থেকে ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ব্রয়লার ১৯০ থেকে ২০০ টাকা, সোনালি প্রতি কেজি ৪৩০ থেকে ৪৫০ এবং দেশি মুরগি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে।
চালের বাজার:
এসব বাজারে প্রতি কেজি মোটা চালের দাম ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, বি আর-আটাশ ৫৫ থেকে-৫৮ টাকা, পাইজাম ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। মাঝারি মানের চিকন চালের কেজি ৭৫ টাকা। আর ভালো মানের চিকন চালের কেজি ৭৮-৮০ টাকা।