মিটে যেতে যেতে আবার নতুন মোড় নিয়েছে মার্কিন-চীন বাণিজ্য যুদ্ধ। চীনের পণ্যের ওপর ২০০ বিলিয়ন ডলার কর আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সেইসঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের টুইট নতুন করে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে দু’দেশের অর্থনৈতিক সর্ম্পকে।
দু-পক্ষের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা শুরু হওয়ার আগে চীনের সঙ্গে বৈরিতা আরও বাড়িয়ে তুললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনের রপ্তানি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত কর আরোপে পাল্টা ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি বেইজিংয়ের। যুক্তরাষ্ট্রের কর আরোপের পর এমন ঘোষণা দিয়েছে চীন।
নতুন করে মার্কিন-চীন বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হলে তার প্রভাব সারা বিশ্বের অর্থনীতির উপর পড়বে বলে সতর্ক বার্তা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। আইএমএফ’র মতে, বিশ্ব অর্থনীতিতে এই ধরণের অস্থিরতা সবার জন্যই হুমকি স্বরুপ। বিশ্বব্যাপী আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দ্রুত দীর্ঘস্থায়ী বাণিজ্য দ্বন্দ্ব সমাধান করার আহ্বান জানায় আইএমএফ।
বাণিজ্য নীতি নিয়ে চীনের প্রতিনিধি দলের ভাইস প্রিমিয়ার লিউ হের সাথে সাক্ষাৎ করেছে মার্কিন ট্রেড রিপ্রেজেনটিটিভ রবার্ট লাইটথাইজার এবং ট্রেজারি সেক্রেটারি স্টিভেন মুনুচিন।
এছাড়া গত বুধবার ফ্লোরিডায় এক প্রচারণা সমাবেশে ট্রাম্প অভিযোগ করে বলেছেন, চীন বাণিজ্য আলোচনায় ‘চুক্তি ভঙ্গ করেছে’। ট্রাম্প আরও বলেছেন, তিনি চীনের বাণিজ্য প্রতিনিধি জি জিনপিং কাছ থেকে চিঠি পেয়েছেন, শিগগিরই তারা কথা বলবেন।
যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যে শুল্ক বৃদ্ধি করলে পাল্টা ‘প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ’ নেওয়া হবে, বেইজিং এমনটি জানানোর পর ট্রাম্প এ মন্তব্য করেন।
কয়েকটি চীনা পণ্যে আরোপিত ১০ শতাংশ শুল্ক বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। আর শুল্ক আরোপ করা হয়নি এমন ৩২ হাজার ৫শ’ডলার মূল্যের পণ্যে খুব শিগগিরই ২৫ শতাংশ শুল্কারোপ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
অতিসম্প্রতি মনে হচ্ছিল, দুই পক্ষ একটি সমঝোতার খুব কাছাকাছি চলে এসেছে এবং তা বাণিজ্য যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাতে পারে। কিন্তু রোববার এক টুইটে ট্রাম্প শুক্রবার ২০০ বিলিয়ন ডলারের চীনা পণ্যে শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা এবং নতুন শুল্ক আরোপের কথা বলার পর পরিস্থিতি পুরোপুরি পাল্টে যায়।
তার এ ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান শেয়ার বাজারের সূচকে বড় ধরনের ধস নামে। ইউরোপীয় শেয়ার বাজারেও এর ধাক্কা লাগে। প্যারিস এবং জার্মানির ফ্র্যাঙ্কফুর্ট শেয়ার সূচকও প্রায় ২ শতাংশ নেমে যায়।
ক্ষতির মুখে পড়ে গাড়ি নির্মাতারাসহ গাড়ির যন্ত্রাংশ এবং স্টিল উৎপাদনকারীরা। চীনে হংকং হ্যাং সেন সূচক প্রায় ২ দশমিক ৯ শতাংশ এবং সাংহাই কমপোজিট ৫ দশমিক ৬ শতাংশ নেমে যায়।