চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন খালিদ মাহমুদ মিঠু

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র নির্মাতা খালিদ মাহমুদ মিঠু। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, চারুকলা ইনস্টিটিউট, এফডিসি ও চ্যানেল আই কার্যালয়ে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় জানানোর পর তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

অন্তিম যাত্রায় প্রিয় খালিদ মাহমুদ মিঠু। চিত্রগ্রাহক, চলচ্চিত্র নির্মাতা কিংবা চিত্রশিল্পী প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিজের প্রতিভার জানান দিয়ে যেমন কুড়িয়েছেন খ্যাতি তেমনি পেয়েছেন মানুষের ভালোবাসা। সেই মানুষটিকে শ্রদ্ধা জানান সর্বস্তরের মানুষ। শ্রদ্ধা জানাতে এসে বিশিষ্টজনেরা বলেছেন, দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গন একজন সব্যসাচী মানুষকে হারিয়েছে বাংলাদেশ।

দেশের সাংস্কৃতি অঙ্গনে যে বহুমাত্রিক প্রতিভার পরিচয় রেখেছেন খালিদ মাহমুদ মিঠু নতুন প্রজন্মের নির্মাতাদের তা অনুসরন করার আহ্বান জানান বিশিষ্টজনদের।

নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দ্র মজুমদার বলেন, বেশি উৎসাহ ছিলো চলচ্চিত্র নির্মাণ, ও টেলিভিশন নাটক নির্মাণে। এবং তিনি চলচ্চিত্রে কাজের স্বীকৃতি হিসেবেও পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস বলেন, সবাইকে চলে যেতে হবে। কিন্তু তিনি যে এতো অসময়ে চলে যাবেন এটি আমাদের ভাবনার একেবারে বাইরে ছিলো।

ইমপ্রেস টেলিফিল্ম চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর বলেন, সবসময় তার চিন্তায় ছিলো তরুণরা। তরুণদের কিভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়, তরুণদের নিয়ে সে কি করতে পারবে এই জিনিসটি মিঠু তার চেয়েও বেশি সেটি চিন্তা করতো।

চিত্রশিল্পী হাশেম খান বলেন, টেলিভিশনের সঙ্গীতের অনুষ্ঠানগুলোর অত্যন্ত সুন্দর একটি শৈল্পিক মাত্রা যোগ করেছিলেন তিনি।

কাজের ক্ষেত্রে তিনি যেমন ছিলেন সার্থক এক মানুষ, পরিবারের অভিভাবক হিসেবেও ছিলেন তেমনি।খালিদ মাহমুদ মিঠুর স্ত্রী কনক চাপা চামকা বলেন, আমার সন্তানদের কাছে এখন আমি একাই মা একাই বাবা। সবাই দোয়া করবেন আমি যেনো শক্ত থাকতে পারি। এবং সন্তানদের মানুষের মতো মানুষ করতে পারি।

মেয়ে শিরোপা পূর্ণা বলেন, বাবা অনেক কিছু দিয়ে গেছেন। যেগুলো মনে রেখেই সামনে এগোবো। ছেলে আর্য্য শ্রেষ্ঠ বলেন, তিনি আমার বন্ধু ছিলেন। আমার জীবনের যতোটুকু স্বাধীনতা তিনি আমাকে পুরোটাই দিয়েছেন।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে খালিদ মাহমুদ মাহমুদ মিঠুর মরদেহ নেওয়া হয় চারুকলা ইনস্টিটিউটে যেখানে লেখাপড়া করেছেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে যোহরের নামাজের পর তার নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।

সেখান থেকে তার মরদেহ আনা হয় এফডিসিতে। দ্বিতীয় জানাযা শেষে খালিদ মাহমুদ মিঠুর মরদেহ নিয়ে আসা হয় চ্যানেল আই ভবনে। তিনি ছিলেন চ্যানেল আইয়ের অনুষ্ঠান বিভাগের প্রথম চিত্রগ্রাহক। তার নির্মিত ইমপ্রেম টেলিফিল্মের ছবি ‘গহীনে শব্দ’ অর্জন করেছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ বলেন, চ্যানেল আইয়ের পক্ষ থেকে এই মুহূর্তে খালিদ মাহমুদ মিঠুর জন্য তার আত্মার মাগফিরাত করা ছাড়া দ্বিতীয় আর কোনো কাজ নেই। সবাই দোয়া করবেন তাকে যেনো পরকালে শান্তিতে রাখেন।

বনানী কবরস্থানে দাফনের আগে চ্যানেল আই প্রাঙ্গন থেকে মিঠুকে শেষ বিদায় জানান স্বজনরা । ছেলেকে অন্তিম শয্যায় দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মা মমতাজ বেগম।খালিদ মাহমুদ মিঠুর স্মরণে চ্যানেল আই কার্যালয়ে খোলা হয় শোক বই। চ্যানেল আই ভবনে খালিদ মাহমুদ মিঠুর তৃতীয় নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।

চ্যানেল আইয়ের পরিচালক,উর্ধতন কর্মকর্তা ও মিঠুর পরিবারের সদস্যরা জানাযায় অংশ নেয়। আছরের নামাজের পর খালিদ মাহমুদ মিঠুকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।