বাংলা ভাষার নাগরিকতা ও আধুনিকতাবোধের সূচনাকার বিরলপ্রজ কবি শহীদ কাদরী আর
নেই। যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় শেষ নিঃশ্বাস
ত্যাগ করেন বলে জানান কবির সহধর্মিনী নীরা কাদরী।
তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ।
গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় গত সোমবার রাত সোয়া তিনটার দিকে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো।
কবির পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তার মরদেহ দেশে এনে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হবে। তার আগে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে কবির মরদেহ।
গত ১৪ আগস্ট বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান এ কবির ৭৪তম জন্মদিন পালন করা হয়।
কবি শহীদ কাদরী ১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। বাংলা কবিতায় এক অসাধারণ প্রতিভাশীল কবি ও লেখক তিনি। ১৯৪৭ সাল পরবর্তীকালের বাংলা সংস্কৃতির বিখ্যাত কবিদের একজন, যিনি নাগরিক-জীবন-সম্পর্কিত শব্দ চয়ন করে নাগরিকতা ও আধুনিকতাবোধের সূচনা করে বাংলা কবিতায় সজীব বাতাস বইয়ে দিয়েছেন।
তিনি আধুনিক নাগরিক জীবনের প্রাত্যহিক যন্ত্রণা ও ক্লান্তির অভিজ্ঞতাকে কবিতায় রূপ দিয়েছেন। ভাষা, ভঙ্গি ও বক্তব্যের তীক্ষ্ম শাণিত রূপ তার কবিতাকে বৈশিষ্ট্য দান করেছে। শহর এবং তার সভ্যতার বিকারকে শহীদ কাদরী ব্যবহার করেছেন তার কাব্যে।
তার কবিতায় অনুভূতির গভীরতা, চিন্তার সুক্ষ্মতা ও রূপগত পরিচর্যার পরিচয় সুস্পষ্ট। চল্লিশের দশকের শেষভাগ থেকে তিনি কাব্যচর্চা শুরু করেন।
তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ হলো; উত্তরাধিকার, তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা, কোথাও কোনো ক্রন্দন নেই ও আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও।
কবিতায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি বাংলা একাডেমী পুরস্কার ও একুশে পদক (২০১১) পেয়েছেন করেন।