টাকা উত্তোলনের সময় যখন গ্রাহকরা ব্যাংকে যায় তখন তাদের সম্পর্কে ধারণা পেতে ওই ব্যাংকেই ওঁত পেতে থাকত ডাকাতদের একটি গ্রুপ, এমনটাই জানিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
সোমবার রাতভর অভিযান চালিয়ে রাজধানীর দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে ডাকাতি প্রস্তুতিকালে ১৩ ডাকাত সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মোঃ বারেক মিয়া, মোঃ গফ্ফার আহমেদ, মোঃ মনির হোসেন, রাসেল বর্ষ ওরফে বর্ষা, মোঃ আল আমিন ওরফে দিপু, মোঃ মোর্শেদ ওরফে মিন্টু, মোঃ সবুজ হোসেন শ্যামল, ওরনি আলম ওরফে ওরনী, মোঃ রিয়াজ, মোঃ মেহেদি হাসান ওরফে মেহেদি, ড্রাইভার মোঃ নাজমুল হাসান ওরফে এরশাদ ও মোঃ আরমান হোসেন।
এ সময় তাদের হেফাজত হতে দু’টি পিস্তল, ৬ রাউন্ড গুলি, দু’টি ম্যাগাজিন, একটি কাঠের লাঠি, একটি প্লাস্টিকের তৈরী কালো রংয়ের ওয়াকিটকি, দু’টি হ্যান্ডকাপ, দু’টি স্টেনলেস স্টীলের ধারালো চাকু, একটি চওড়া স্কচটেপ, একটি গামছা, একটি ডিবি জ্যাকেট এবং একটি সিলভার কালারের নোহা মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মো. আব্দুল বাতেন।
তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে কেউ ব্যাংকে অবস্থান করে টাকা উত্তোলনকারী গ্রাহকদের সম্পর্কে ব্যাংকের বাইরে অবস্থানকারী দলের কাছে তথ্য দেয়। ব্যাংকের বাইরে থাকা দল গ্রাহকদের অনুসরণ করে এবং গাড়িতে থাকা দলকে সুবিধা মত জায়গায় থাকতে বলে।
গ্রাহক ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বের হওয়ার সময় পাশের গাড়ীতে থাকা ডাকাত দল সুবিধা মত জায়গায় তাদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে জোর করে গাড়িতে তুলে নেয়। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে চোখ বেঁধে ফেলে। মুখে স্কচটেপ পেঁচিয়ে গাড়ি নিয়ে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে থাকে। ভিকটিমের নিকট থাকা সমস্ত টাকা ও অন্যান্য মালামাল নিয়ে সুবিধামত জায়গায় নামিয়ে দেয়।
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা গেছে, গত ০৬ জুলাই ধোলাইপাড় এলাকায় ব্রাক ব্যাংক শাখা হতে ৪ লাখ ৮১ হাজার টাকা উত্তোলন করে মনির হোসেন এবং মোঃ মহিউদ্দিন রিক্সাযোগে যাওয়ার সময় সায়েদাবাদের ন্যাব ইনকর্পোরেশন নামক দোকানের সামনে থেকে তাদের তুলে নিয়ে চোখ বেঁধে মারধর করে তাদের সঙ্গে থাকা মোট ৫ লাখ ৩৬ হাজার টাকা এবং একটি স্যামসাং মোবাইল সেট ছিনিয়ে নেয়। পরে তাকে সাইনবোর্ড গিরিধারায় গাড়ি থামিয়ে নামিয়ে দেয়।
গ্রেফতার আসামী ডাকাত মোঃ বারেক মিয়ার স্বীকরোক্তির ভিত্তিতি তার স্ত্রী-সাম্মী আক্তারের কাছ থেকে ১ লাখ ১৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয় বলেও জানান তিনি।