চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে গ্যাসের লাইনে ছিদ্রের কারণেই চট্টগ্রাম নগরের পাথরঘাটায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সেই বিস্ফোরণ থেকেই দেয়ালধস হয়।
রোববার প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ জেড এম শরীফ হোসেন। এ জন্য ভবন মালিকদেরও দায়ী করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত রোববার ১৭ নভেম্বর সকালে ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় পথচারীসহ ৭ জন নিহত এবং অন্তত ১২ জন আহত হন।
গ্যাস লিকেজ বা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ বাংলাদেশের প্রায় নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছে। কিছুদিন মিডিয়ায় লেখালেখি এবং তদন্ত কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এসব দুর্ঘটনার সংবাদ।
ঘটনার দিনই তড়িঘড়ি করে প্রতিবেদন জমা দেয় কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল)। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়: গ্যাসের পাইপলাইন ও রাইজার থেকে কোনো বিস্ফোরণ ঘটেনি। সেপটিক ট্যাংকের গ্যাস থেকেই এ দুর্ঘটনা হতে পারে। অথচ আজ তদন্ত প্রতিবেদনে এ জেড এম শরীফ হোসেন বলেছেন: গ্যাসের ছিদ্রের কারণেই বিস্ফোরণ হয়েছে। এ ঘটনার পেছনে সেপটিক ট্যাংকের ভূমিকা নির্ণয় করতে পারিনি।
প্রতিটি তদন্ত কমিটি একটি রিপোর্ট দেয়। সেখানে দোষী ব্যক্তিদের শনাক্ত করা হয়। দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে বা প্রতিহত করার জন্য সুপারিশমালা সাজানো হয় বাংলা প্রমিত শব্দে। কিন্তু এরপর আর সে বিষয়ে কোনো টুঁ শব্দ নেই। নেই জনগণের কৌতুহল বা জানার ইচ্ছা। সুতরাং বিষয়টি সেখানে ধামাচাপা পড়ে যায়। আর নতুন ইস্যুতে মিডিয়া সরগরম হয়।
সাধারণ জীবনের ধারায় আমরা ভুলে যাই একজন শিক্ষক বা সম্ভাবনাময় মেধাবী ছাত্র বা পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির অনুপস্থিতি একটি পরিবারে কী দুঃসহ যন্ত্রণা-কষ্টের কারণ হয়ে থাকে সারাজীবন। সুতরাং চট্টগ্রামের পাথরঘাটা আর ঢাকার স্কুলে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের মূল কারণগুলো এভাবেই অবহেলিত পড়ে থাকে আমাদের যাপনের পলেস্তরার নিচে। এর সুরাহা হবে তখন, যখন মানুষ সচেতন হয়ে প্রতিরোধ করবে। তার আগ পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে মেনে নিয়ে আমাদের বেঁচে থাকতে হবে। আমরা চাই প্রতিবেদন অনুযায়ী যেনো দোষীদের ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হয়। নতুবা এই ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে।