গলায় টাকার মালা পরে একজন প্রার্থী এলাকাবাসীর কাছে ভোট চাইছেন এমন
দৃশ্য সিনেমার পর্দায় দেখা যায়। এবার বাস্তবেও তা ঘটেছে। টাকার মালা
পরে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়ন
পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আ ন ম শওকত হাবিব
লজিক।
এলাকাবাসীর কাছে তার ‘রাজাকারপুত্র’ বলেও একটি পরিচয় আছে। তার পিতা আজহারুল ইসলাম তালুকদার একাত্তরে পাকিস্তানের পক্ষে ক্ষেতলাল থানা শান্তি ও প্রতিরক্ষা কমিটির সদস্য ছিলেন।
একদিকে ‘রাজাকারপুত্র’র আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া, অন্যদিকে লজিকের এমন ‘উদ্ভট’ প্রচারণায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মী-সমর্থকরা ক্ষুব্ধ। তারা বলছেন, কোনো রাজাকার ও তার সন্তানদের হাতে নৌকা প্রতীক তুলে না দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর স্পষ্ট নির্দেশনা থাকার পরও লজিকের দলীয় মনোনয়ন তাদের নেত্রীর নির্দেশের সুস্পষ্ট লংঘন।
মনোনয়নের আগেই তারা একাধিকবার জয়পুরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে কোনো ‘রাজাকারপুত্র’কে মনোনয়ন না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। সেসময় তারা জানিয়েছিলেন আহম্মেদাবাদ, মাত্রাই ও পুনট ইউনিয়নে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে অন্ততঃ তিনজন রাজাকারের সন্তান রয়েছেন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এবং সাবেক চেয়ারম্যান মোকছেদ আলী ফকির জানান, একাত্তরে ক্ষেতলাল থানা শান্তি ও প্রতিরক্ষা কমিটির কোনো সদস্যের সন্তানকে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী না করতে তারা আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত একজন মনোনয়ন পেয়েছেন।
তবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া আ ন ম শওকত হাবিব লজিক ছাত্রজীবন থেকেই আওয়ামী লীগ
রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার দাবি করে বলেন, তার পরিবারের বিরুদ্ধে যে
অভিযোগ আনা হয়েছে- তা সত্য নয়। ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মিথ্যা অভিযোগ
করে ফায়দা লুটতেই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক জেলা পর্যায়ের এক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, তথ্য গোপন করে রাজাকারপুত্র আ ন ম শওকত হাবিব লজিককে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়েছে। এ কারণে স্থানীয় নেতা-কর্মীরা হতাশ ও ক্ষুব্ধ।