রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুসহ জোড়া হত্যার ঘটনাকে ‘কন্ট্রাক্ট কিলিং’ বলছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গোয়েন্দাদের দাবি, হত্যাসহ কয়েকটি মামলার আসামী শুটার মাসুম মোহাম্মদ আকাশ পুলিশকে জানায়, এসব খুনের মামলা থেকে নিজেকে বাঁচাতে নতুন হত্যাকাণ্ডে জড়ায় সে।
আকাশকে গ্রেফতার করার পর ডিবি জানিয়েছে, জয়পুরহাট সীমান্ত দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলো সে। হত্যাকাণ্ডের দু’দিন আগেও মোটর সাইকেলে এসে টিপুকে গুলি করার চেষ্টা চালিয়েছিলো মাসুম।
পুলিশ বলছে, মাসুম মোহাম্মদ আকাশ স্কুল শিক্ষক বাবার একমাত্র সন্তান। গ্রাফিক্স ডিজাইন নিয়ে লেখাপড়া শেষে মাদারটেক এলাকায় ডিস ব্যবসা শুরু করে। ব্যবসায় আধিপত্যের লড়াইয়ে একটি হত্যাসহ মোট ৪টি মামলার আসামী মাসুম। একসময় হয়ে ওঠে পেশাদার খুনি। ব্যবসা চালাচ্ছিলো আন্ডার গ্রাউন্ডে থেকে। এরই মধ্যে প্রস্তাব আসে, সব মামলা থেকে রেহাই ও বিদেশে পাঠিয়ে দেবেন এক বড় ভাই। বিনিময়ে আওয়ামী লীগ নেতা টিপুকে হত্যা করতে হবে। রাজি হয় আকাশ। কমলাপুর ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোতে তার হাতে তুলে দেয়া হয় গুলি ভর্তি আগ্নেয়াস্ত্র, সঙ্গে নম্বরপ্লেটবিহীন একটি মোটরসাইকেল।
প্রথম দুদিন সুবিধা করতে না পারলেও পরের দিন অপারেশন সাকসেসফুল। রাজধানীর শাহজাহানপুর আমতলী এলাকায় মাইক্রেবাসের ভেতর এলোপাতাড়ি গুলিতে মতিঝিলের আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে হত্যা করে মাসুম। কিলিং মিশন শেষে ভাড়া করা গাড়িতে প্রথমে জয়পুরহাট পরে বগুড়া। সেখানেই ডিবির জালে ধরা।
ডিবির এডিশনাল কমিশনার একেএম হাফিজ আখতার বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাসুম জানায় তার ধারণা ছিলো কেউ তাকে চিনবে না এবং পুলিশ তাকে ধরতে পারবে না।
হত্যার নির্দেশদাতা কিলার মাসুমের গড ফাদারকে নজরদারীতে রেখেছে গোয়েন্দারা। এ হত্যাকাণ্ডের পেছনের মোটিভ বের করার জন্য এবং মাসুমের সহযোগী ও নির্দেশদাতাকে খুঁজে বের করতে পুলিশ আরও গভীর তদন্ত চালিয়ে যাবে বলেও জানান তিনি।
হাফিজ আখতার আরও বলেন, মাসুম জানিয়েছে, কলেজ ছাত্রী প্রীতি তার টার্গেট ছিলো না। টিপুকে গুলি করে পালানোর সময় ছোড়া ফাঁকা গুলিতে প্রীতি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়।