এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘আমাদের হতাশ হওয়ার কারণ নাই। আমাদের কর্মীরা ক্লান্ত কিন্তু হতাশ নয়। আমাদের নেতা-কর্মীরা যেরকম অত্যাচার-নির্যাতনকে সহ্য করে এখনো বুক টান করে দাঁড়িয়ে আছে স্বাধীনতা রক্ষায়, এই স্বাধীনতা কেউ কেড়ে নেয়ার ক্ষমতা প্রতিবেশিদের নাই। কারো নাই।’
প্রতিবেশি দেশের দালালি করে সরকার বেশিদিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না বলেও এসময় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
শুক্রবার (১০ মে) বিকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহানগর দক্ষিন বিএনপির উদ্যোগে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ আটক নেতা-কর্মীদের মুক্তি এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সমাবেশে তিনি এই মন্তব্য করেন।
গয়েশ্বর বলেন, প্রতিবেশিদের দালালি করে শেখ হাসিনা বেশি দিন টিকতে পারবে না। কারণ যারা অন্যায়ভাবে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকে তাদের পরিণতিটা কী বিভিন্ন দেশে, ইতিহাসটা পড়েন। তাহলে বুঝবেন যত জুলুম, যত লুটপাট, যেমন আঘাত শুরু করছেন আপনার সাঙ্গ-পাঙ্গদের দিয়ে শুরু করছেন, ক্ষমতাচ্যুতের পর কারো কাছ থেকে সাহায্য পাওয়ার, ক্ষমা চাইবেন সুযোগ পাবেন না।
‘সরকারের রিমোট কন্ট্রোল কার হাতে’
গয়েশ্বর বলেন, ‘আপনারা একজনের নাম বলছেন, আমার নাম উচ্চারণ করতে লজ্জা হয়। তাও বলতে হয়, একটু আগে বলছেন, বিএনপি চলে রিমোট কন্ট্রোলে? হ্যাঁ, বিএনপি রিমোট কনট্রোলে চলে? রিমোট কনট্রোল কার হাতে? দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার হাতে নয়ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যিনি আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারেক রহমানের হাতে।’
‘আপনাদের রিমোট কনট্রোলটা কোথায়? আপনাদের সরকারের রিমোট কনট্রোল কার হাতে? মোদির হাতে, না অজিত দোভাল (জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা) হাতে না, অমিত শাহের (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) হাতে। তাদের রিমোট কনট্রোলে আপনাদের চলতে হয়।’
তিনি বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব বলছিলেন না সারা বিশ্বের মানুষ যেভাবে গণতন্ত্র গণতন্ত্র বলে ষড়যন্ত্র করতেছিল, ভারত যদি আমাদের পাশে না থাকতো এই নির্বাচন আমরা করতে পারতাম না। তাই না…। ভারতই আপনাদের রাখছে, ভারতই আপনাদের রাখবে… এই তো।’
‘তার মানে গণতন্ত্রের অবস্থা কী? বাই দ্য পিপল, ফর দ্য পিপল, অব দ্য পিপল। আর আপনাদের কথা শুনে মনে হয়, ডেমোক্রেসি মিনস বাই দ্য ইন্ডিয়া, ফর দ্য ইন্ডিয়া, বাই দ্য ইন্ডিয়া… নাকি। এর বেশি কিছু? মনে হয় না।’
সীমান্ত হত্যার প্রসঙ্গ টেনে দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে অভিযোগ করে এর দেশকে রক্ষায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মতো ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বানও জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।
বাইরে ফিটফাট, ভেতরে সদরঘাট: রিজভী
উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচনের ভোটার উপস্থিতি দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ৭ জানুয়ারি থেকেও কম উল্লেখ করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এই নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ৭ জানুয়ারির নির্বাচন থেকেও কম। ঠিক ভোট ফেয়ার হয়েছে, সেখানে যে যেখানে পারছে সে সেখানে সিল মারছে… বাইরে ফিট-ফাট আর ভেতরে সদরঘাট… এই হচ্ছে গতকালের নির্বাচনের অবস্থা।’
ট্রাকের ওপর তৈরি অস্থায়ী মঞ্চে সমাবেশের বেগম খালেদা জিয়ার ছবি সম্বলিত বিশাল ব্যানারে লেখা ছিলো: ‘মা আমায় দিচ্ছে ডাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’। সমাবেশের পর একটি মিছিল কাকরাইলের নাইটেঙ্গল রেস্টুরেন্ট মোড় হয়ে নয়া পল্টনের কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।
মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় সমাবেশে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মহানগর বিএনপির আমিনুল হক, ইশরাক হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানি, যুব দলের এম মোনায়েম মুন্না, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, হাবিবুর রহমান হাবিব, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মীর সরাফত আলী সপু, আজিজুল বারী হেলাল, এবিএম মোশাররফ হোসেন বক্তব্য রাখেন।