খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চলমান মামলাকে ফৌজদারি মামলার আবরণে রাজনৈতিক মামলা বলে দাবি করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
তিনি বলেন: পশ্চিমা দেশগুলোতে এ ধরনের মামলাগুলোকে বলা হয় ‘বানোয়াট মামলা’। বেগম জিয়ার জনপ্রিয়তার কারণে এ মামলা এখনো চলছে। নয়তো যখন এ মামলা আদালতে আসে তখনই খারিজ হয়ে যেতো।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে ৯ দিনের যুক্তি উপস্থাপন করতে এসে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এসব কথা বলেন। এর আগে সকাল থেকে যুক্তি উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকার। সেসময় খালেদা জিয়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালতের উদ্দেশে মওদুদ বলেন: এটি ফৌজদারি মামলার আবরণে রাজনৈতিক মামলা। সামনে নির্বাচন। তাই সরকারের আচরণ দূরভিসন্ধিমূলক। সরকারের যে আচরণ তা গণতন্ত্রের মূল্যবোধের পরিপন্থী।
তিনি বলেন: এ মামলা এখানে কেন? এখানে কোর্টের কোন পরিবেশ নেই। লজিস্টিক সাপোর্ট নেই। এখানে আসামীরা তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি সংবিধানের লঙ্ঘন। তার মধ্যে আরো ১৪টি মামলা এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। এখানে কেন? এটি ক্যামেরা ট্রায়ালের জন্য।
‘এ মামলার অভিযোগগুলোর কোন ভিত্তি নেই। এটি একটি প্রাইভেট ট্রাস্ট। শহীদ জিয়ার সঙ্গে কুয়েতের আমিরের একটা বন্ধুত্বের জন্য তার নামে ট্রাস্টে আসছে এই অর্থটা। সরকারি কোন অর্থ না। এ মামলা রাজনৈতিক। নয়তো এ মামলা প্রথম দিনেই খারিজ হয়ে যেতো।’
মওদুদ বলেন: এই অর্থ আত্মসাৎ তো দূরে থাক, ২ কোটি ৩৩ লাখ থেকে বেড়ে এখন ৬ কোটি হয়েছে। মূলত যে মামলাটি করা হয়েছিলো তা হয়নি। অনুসন্ধান ও তদন্তকারী কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ নিজেই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। বিএনপি আমলে তার চাকরি চলে গিয়েছিলো তার জন্য তার মধ্যে ক্ষোভ থাকতেই পারে। মূলত জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করাই তাদের লক্ষ্য। তার জন্য বেগম জিয়া, তারেক রহমানকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে। কিন্তু এ মামলা যে বানোয়াট তা সবাই বুঝে। আদালত ন্যায় বিচার করবেন বলে আশা করি।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ১০ মিনিটে পুরান ঢাকার বকশিবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে উপস্থিত হোন খালেদা জিয়া। এরপর থেকে যুক্তিতর্ক শুরু হয়।
সকাল ১০টা ২২ মিনিটে গুলশানের নিজ বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে আদালতের উদ্দেশ্যে রওনা হন বিএনপি চেয়ারপারসন। খালেদা জিয়ার হাজিরাকে কেন্দ্র করে আদালত ও এর আশপাশের এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা নেয়া হয়। এসময় বিপুলসংখ্যক পুলিশ, র্যাব মোতায়েন করার পাশাপাশি আদালতের প্রধান ফটকে স্ক্যানার বসিয়ে তল্লাশি করে ভেতরে ঢোকানো হয়।
এর আগে গতকাল বুধবার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তার পক্ষে ৮ম দিনের মত যুক্তি উপস্থাপন করেন তার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। তার যুক্তি উপস্থাপন শেষে ব্যরিস্টার জমির উদ্দিন সরকার খালেদার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। তার যুক্তি উপস্থাপন শেষ না হওয়ায় বৃহস্পতিবার নতুন দিন ধার্য করা হয়।
১৬, ১৭ ও ১৮ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।