নতুন নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নিয়েছে এক মাস। এর মধ্যে তারা মাঠ পর্যায়ের কয়েকটি নির্বাচন বেশ সফলতার সঙ্গে শেষ করেছেন। রাজনৈতিক সংস্কৃতি অনুসারে যথারীতি দেশের অন্যতম বৃহত্তম দল বিএনপি বর্তমান নির্বাচন কমিশনের উপরে অনাস্থার ঘোষণা দিয়েও মাঠ পর্যায়ের নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। অন্যদিকে ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দল। গতকাল (১৪ মার্চ) লক্ষ্মীপুরে জনসভায় আগামী জাতীয় নির্বাচনে নিজ দলের জন্য ভোট চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় নির্বাচনের আগে সাম্প্রতিক সময়ে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সামনে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন। নৌকা-ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীরা এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। মেয়র পদসহ ২৭টি ওয়ার্ড ও ৯টি সংরক্ষিত নারী আসনের লড়াই হবে নির্বাচনে। রাজধানীর বেশ কাছে অবস্থিত ২ লাখ ৭ হাজার ৩৮৪ ভোটারের এই নির্বাচনী এলাকা বিভিন্ন কারণে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আগামী ৩০ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচনে ভোটের সার্বিক পরিস্থিতি বর্তমান কমিশনের ওপর দেশের জনগণের আস্থা তৈরি করবে বলে আগেই ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার খান মো. নুরুল হুদা। বর্তমান সংসদের বাইরে থাকা বিএনপিসহ তাদের জোটভূক্ত দলগুলো আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবে কী নেবে না, এ নিয়ে নানা হিসাব-বিশ্লেষণের মুখে এই নির্বাচন বেশ গুরুত্বপূর্ণ। নাগরিক সমাজ ও কূটনৈতিক বিভিন্ন মহলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির বিষয়ে দিকনির্দেশনামূলক ইতিবাচক আলোচনার সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে দেশের জনগণ ভোট দিতে পারলেও বিগত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিভিন্ন কারণে অধিকাংশ মানুষকে ভোটে অংশ নিতে হয়নি। সেই প্রেক্ষাপটে জনগণের মধ্যেও রয়েছে ভোটে অংশগ্রহণের চাহিদা। বিগত কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনের উদাহরণ একটি মাইলফলক হিসেবে বর্তমান কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়ক হবে বলে আমরা মনে করি। সরকারের সার্বিক সহযোগিতা আর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সক্রিয় দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে কুমিল্লার সিটি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হলে তা পরবর্তীতে জাতীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা তৈরিতে সহায়ক হবে বলেও আমাদের প্রত্যাশা।