দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের উদ্ভূত পরিস্থিতে সন্ধ্যার পর ফার্মেসি ব্যতীত বন্ধ থাকছে সবকিছুই। প্রায় সর্বত্র অঘোষিত লকডাউন চলতে থাকা ওষুধের দোকানগুলো ঘিরে ডাকাতি-ছিনতাইয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় ওষুধের দোকানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।
শুক্রবার পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) সোহেল রানা এক ভিডিও বার্তায় বিষয়টি জানান।
তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণের উদ্ভূত পরিস্থিতে অপরাধের প্রকৃতিগত কিছু পরিবর্তন এসেছে। ইতোমধ্যে ওষুধের দোকানসহ কিছু কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যেগুলো বিশেষ করে সন্ধ্যার পর খোলা রাখার অনুমতি রয়েছে। এরকম কিছু কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আমরা ছিনতাইয়ে ঘটনা খেয়াল করেছি।
এ বিষয়ে পুলিশের সজাগ থাকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুলিশ ইতোমধ্যে ওষুধের দোকানকেন্দ্রিক তৎপরতা বাড়িয়েছে। আমাদের মোবাইল পেট্রোল টিমগুলো ওষুধের দোকানকেন্দ্রীক ডিউটি পরিচালনা করছে। এছাড়া, শহরের অনেক স্থানেই সিসিটিভি মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে, আমরা এগুলোর সহায়তা নিচ্ছি।
ওষুধ ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, লেনদেন বা দ্রব্যসামগ্রী দেওয়ার সময় যেন তারা সতর্কতা অবলম্বন করেন। যাদের শাটারের ভেতরে লোহার গ্রিল রয়েছে, তারা যেন লোহার গ্রিলের ভেতর থেকেই লেনদেন করেন। আবশ্যিক না হলে ক্রেতা বা আগন্তুককে যেন ভেতরে প্রবেশের সুযোগ না দেন।
এ ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। যেখানেই এমন খবর পাচ্ছি বা টের পাচ্ছি, তাৎক্ষনিকভাবে আমাদের টিম পাঠিয়ে অপরাধীকে খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
করোনার বিস্তাররোধে সরকারের সাধারণ ছুটি ঘোষণায় জনশূন্যতার সুযোগে গত ১ এপ্রিল রাত সাড়ে ১২টা থেকে ১টার মধ্যে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কলেজগেট এলাকার বিল্লাহ ফার্মায় ডাকাতি করে দুর্বৃত্ত চক্র।
ভুক্তভোগীরা জানান, হঠাৎ একটি ট্রাক ব্যাক গিয়ার দিয়ে ফার্মাসিতে সামনে এসে দাঁড়ায়। সেখান থেকে মাথায় গামছা বাঁধা ও মুখে মাস্ক পরা দু’জন চাপাতি ও একজন রড নিয়ে দোকানে প্রবেশ করে। সেখানে আরমান নামে এক ক্রেতা, ফার্মেসির মালিক নাহিদ বিল্লাহ ও ইউসিবিএল ব্যাংকের এটিএম বুথের সিকিউরিটি মো. সোহাগকে মারতে মারতে দোকানের পেছনে নিয়ে যায়। এরপর ডাকাতরা আরমানের পকেটের মানিব্যাগ ও মোবাইল এবং ফার্মেসিতে থাকা ল্যাপটপ ও নগদ টাকা নিয়ে দ্রুত চলে যায়।
চার দিনের মাথায় ৫ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর খিলগাঁও থানাধীন সি ব্লকে লাজ ফার্মার একটি শাখায় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে লুটপাট চালায় দুর্বৃত্তরা। মাত্র ২-৩ মিনিটেই তারা ওই দোকান থেকে ২ লাখ টাকা, মোবাইল ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়।
দুই ঘটনাতেই সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়ের করেছে ক্ষতিগ্রস্ত ফার্মেসির মালিকপক্ষ।