দেশে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের ১৪২তম দিনে গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৭৭২ জনের দেহে করোনাভাইরাস এর উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ৩৭ জন মারা গেছেন। এসময়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮০১ জন।
সোমবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এসব তথ্য জানান।
ডা. নাসিমা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ হাজার ৫৪৪টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আগের কিছু নমুনাসহ পরীক্ষা করা হয়েছে ১২ হাজার ৮৫৯টি। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ১১ লাখ ২৪ হাজার ৪১৭টি। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
তিনি বলেন, নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও ২ হাজার ৭৭২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ২৬ হাজার ২২৫ জন। মোট শনাক্তের হার ২০ দশমিক১২ শতাংশ। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৩৭ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২ হাজার ৯৬৫-এ। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩১ শতাংশ।
তিনি আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ১ হাজার ৮০১ জন। সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ২৫ হাজার ৬৮৩ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তাদের পুরুষ ২৬ জন এবং নারী ১১ জন। মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ২৩৩২ জন পুরুষ ও নারী ৬৩৩ জন। বিশোর্ধ্ব একজন, ত্রিশোর্ধ্ব একজন, চল্লিশোর্ধ্ব ৭ জন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ৭ জন, ষাটোর্ধ্ব ১২ জন, সত্তরোর্ধ্ব আটজন এবং ৮০ বছরের বেশি বয়সী একজন রয়েছেন। ৩৩ জন মারা গেছেন হাসপাতালে এবং চারজন বাসায়।
মৃতদের ২৪ জন ঢাকা বিভাগে, ৫ জন চট্টগ্রাম বিভাগে, খুলনায় ২ জন, ময়মনসিংহে ১ জন, রংপুরে ৩, বরিশালে ২ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৫৫০ জনকে এবং এ পর্যন্ত আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ৪৭ হাজার ৭৭৬ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৬৭৫ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ২৮ হাজার ৭৬৯ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ১৯ হাজার ৭ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই হাজার ৪৫১ জনকে এবং এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ৪ লাখ ২৭ হাজার ৯৯৭ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২ হাজার ৮৬০ জন। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন থেকে মোট ছাড় পেয়েছেন তিন লাখ ৬৯ হাজার ৬০৭ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৫৮ হাজার ৩৯০ জন।
স্বাস্থ্য বুলেটিনে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়। ডা. নাসিমা বলেন, সচেতন থাকুন, সতর্ক হোন। কুরবানী ঈদের আগে সবাই পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।
চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে বিশ্বের ২১৫টি দেশ ও অঞ্চলে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৬৪ লাখেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে মারা গেছেন ৬ লাখ ৫২ হাজারের বেশি মানুষ। তবে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ১ কোটি ৫৭ হাজারের বেশি মানুষ।
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে বিভিন্ন মেয়াদে ছুটি বাড়িয়ে সর্বশেষ ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। দেশের ইতিহাসের দীর্ঘ এ ছুটির পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৩১ মে থেকে অফিস-আদালত খোলা হয়েছে। এছাড়াও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে চালু হয়েছে গণপরিবহনও।