কথাসাহিত্যিক শওকত আলী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৮টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
শওকত আলী দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন।
কথাসাহিত্যিক, সাংবাদিক ও শিক্ষক শওকত আলীর লেখা উপন্যাসের মধ্যে প্রদোষে প্রাকৃতজন, পিঙ্গল আকাশ, যাত্রা, ভালোবাসা কারে কয় অন্যতম। বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৯০ সালে তাকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়।
বাদ জোহর রাজধানীর টিকাটুলি জামে মসজিদে শওকত আলীর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বিকেল ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে তার মরদেহ। এরপর বাদ আসর জুরাইন কবরস্থানে স্ত্রী’র কবরের পাশে শওকত আলীকে দাফন করা হবে।
শওকত আলীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
শওকত আলীর জন্ম ১৯৩৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর দিনাজপুর জেলার থানা শহর রায়গঞ্জে। তার বাবার নাম খোরশেদ আলী সরকার এবং মায়ের নাম সালেমা খাতুন। শওকত আলী ছিলেন তাদের তৃতীয় সন্তান।
১৯৫৫ সালে বিভিন্ন পত্রিকায় তার লেখা প্রকাশিত হতে শুরু করে। একই সময়ে দৈনিক মিল্লাত পত্রিকার নিউজ ডেস্কে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৫৮ সালে দিনাজপুরের একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে এবং ১৯৫৯ সালে ঠাকুরগাঁও কলেজে বাংলার প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন।১৯৬২ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন তৎকালীন জগন্নাথ কলেজে (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) এবং ১৯৮৮ সালে জেলা গেজেটিয়ারের ঢাকার হেড অফিসে সহকারি পরিচালক হিসেবে যোগদান করে পরিচালক পদে উন্নীত হন। ১৯৮৯ সালে তিনি সরকারি সঙ্গীত কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৯৩ সালে অবসরগ্রহণ করেন।
নবম শ্রেণীতে পড়াবস্থায় লেখালেখি শুরু করলেও ভারত ভাগের পর কলকাতার বামপন্থীদের ‘নতুন সাহিত্য’ নামে একটি পত্রিকায় প্রথম শওকত আলীর গল্প প্রকাশিত হয়। এরপর দৈনিক মিল্লাত, মাসিক সমকাল, ইত্তেফাকে তার অনেক গল্প, কবিতা এবং শিশুদের জন্য লেখা প্রকাশিত হয়। তার দক্ষিণায়নের দিন, কুলায় কালস্রোত এবং পূর্বরাত্রি পূর্বদিন যেগুলোকে ত্রয়ী উপন্যাস বলা হয়, যার জন্য তিনি ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৬) অর্জন করেন।