তামিম ইকবাল আউট হলেও দেখতে ভাল লাগে। বাংলাদেশের ক্রিকেটে এমন একটি কথা প্রচলিত আছে। তার বিপরীতে অন্য ওপেনারদের ক্ষেত্রে এই কথা এতটুকু খাটে না। সৌম্য থেকে ইমরুল, ইমরুল থেকে বিজয়; প্রত্যেকের শারীরিক ভাষায় থাকে দৃষ্টিকটু জড়তা। ত্রিদেশীয় সিরিজে এনামুল হক বিজয়ই তার শেষ উদাহরণ।
বিজয় প্রথম দুই ম্যাচে ১৯, এবং ৩৫ রান করেন। এদিন ফিরেছেন এক রানে। পরের ম্যাচে সেঞ্চুরি করে ফেললেও ওই খোঁচাখুঁচির দুর্নাম থেকে রেহাই পাচ্ছে না। যে ম্যাচে ৩৫ করেন সেই ম্যাচে জীবন পান। কোন বলে কী শট খেলবেন, তা নিয়ে একাধিকবার দ্বিধায় ভুগতে দেখা গেছে।
অনেক ব্যাটসম্যান আছেন, যারা আগে থেকে পরিকল্পনা করে রাখেন শুরুতে ‘অমুক’ শট খেলবেন না। দেখা যায় উইকেটে নেমে হঠাৎ সেই শট খেলে ফেলেছেন! বিজয়-সৌম্যদের অবস্থা ঠিক তাই।
এটা যতটা না টেকনিক্যাল সমস্যা, তার থেকে বেশি মানসিক সমস্যা। ওই মানসিক সমস্যা আবার টেকনিক্যাল সমস্যা থেকেই সৃষ্টি হয়। যুগে যুগে ক্রিকেট সাইকোলজি নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। সেইসব গবেষণার চমকপ্রদ কিছু তথ্য আছে।
যেমন সেই ব্যাটসম্যান অনায়াস ব্যাটিং করে যান, যিনি তার ইনিংসের পুরো ছবিটা ‘তৃতীয় নয়নে’ দেখতে পান। তিনি জানেন কখন কী করবেন। কোন বল কীভাবে মোকাবিলা করবেন কিংবা ছেড়ে দিবেন। কোন বল খেলবেন, সেটা যতটা তিনি ভালো বোঝেন তার চেয়ে বেশি জানেন কোন বল তিনি খেলবেন না।
আর সেই ব্যাটসম্যান উইকেটে ‘খোঁচাখুঁচি’ করেন, যার ‘তৃতীয় নয়ন’ দুর্বল। এমন সমস্যার সঙ্গে টেকনিক্যাল সমস্যা যোগ হলে দিনের পর দিন সৌম্যর পরিণত বরণ করতে হয়।
এই যুগে কোনো ব্যাটসম্যানই শতভাগ নিখুঁত হতে পারেন না। তার ব্যাটিংয়ের ভিডিও বিশ্লেষণ করে কোনো না কোনো খুঁত বের করা সম্ভব। তাহলে উপায়?
প্রধানতম উপায় সিঙ্গেল রানের ওপর ভরসা করা। বলের পর বল ‘ডট’ খেলে গেলে বোলার তার জোন ঠিক করে ফেলে। দলের ওপর যেমন চাপ পড়ে, তেমনি ব্যাটসম্যানের ওপরও পড়ে। আর তখনই শর্টবলে ফ্রন্টফুটে চলে যাওয়ার প্রবণতা শুরু হয়। অর্থাৎ লেন্থ না বুঝে শট খেলা শুরু হয়। শুরু হয় হুটহাট ব্যাট চালিয়ে দেয়ার ঝোঁক।
যে ঝোঁকে বাংলাদেশ দলের ওপেনাররা ডুবে আছেন দিনের পর দিনে। তামিমকে দেখেও কেউ শিখছেন না কিংবা শিখতে পারছেন না।