চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

‘ওই ছাত্রীর সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয় এসআই রতনের’

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে পুলিশের এসআই রতন কুমার হালদারের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে হয়রানির অভিযোগ খতিয়ে দেখে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে পুলিশের তদন্ত কমিটি।

পুলিশের তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে অভিযোগকারী ও অভিযুক্তের বক্তব্য নিয়েছে। ঘটনাস্থল শিয়া মসজিদের সামনের দোকান-মালিক ও কর্মচারীদের সঙ্গেও কথা হয়েছে তদন্ত দলের।

প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানিয়েছে বাক-বিতণ্ডা হলেও ওই ছাত্রীকে নিয়ে এসআই রতন কোনো দোকানের ভেতর ঢোকেননি।

পুরো বিষয়টি তদন্তনাধীন থাকায় এ প্রসঙ্গে আর বেশি কিছু জানানো সম্ভব নয় বলে চ্যানেল আই অনলাইনকে জানিয়েছেন পুলিশের দুই উর্ধতন কর্মকর্তা।

অভিযোগ তদন্তে ওই ছাত্রী শুরুতে পুলিশকে সহায়তা করতে রাজি হননি। পরে অবশ্য তার বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বক্তব্য নেন মোহাম্মদপুর অঞ্চলের সহকারী পুলিশ কমিশনার।

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন,‘রোববার বেলা তিনটার দিকে শিয়া মসজিদ মোড়ে ওই ছাত্রীকে রিকশা থেকে নামিয়ে কথা বলেন এসআই রতন। এ সময় তাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হতে দেখেছেন আশপাশের লোকজন। তবে তাদের মধ্যে কী কথা হয়েছে, তা কেউ বলতে পারেননি।’

উপ-কমিশনার আরও বলেন, ‘ওই ছাত্রীর বিরুদ্ধে কোনো পরোয়ানা ছিলো না। তাছাড়া তাকে তল্লাশির জন্য নারী পুলিশও ছিলো না সেসময়। তারপরও কোনো পরোয়ানা, নারী পুলিশ ছাড়া এসআই রতন মেয়েটির সঙ্গে কথা বলতে গেলেন, এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’

‘ওই ঘটনার পর অতিরিক্ত উপ-কমিশনারকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে এই গুরুতর অভিযোগ নিয়ে দ্রুততম সময়ে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। তিন পুলিশ কর্মকর্তার সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি কাজ করছে। এখন এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করাটা অনুচিত হবে।’

এ বিষয়ে পুলিশের অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার এবং গঠিত তদন্ত কমিটির আনিসুর রহমান বলেন,‘তিন কার্যদিবসে অভিযোগ খতিয়ে দেখে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারবো বলে আশা করি। বৃহস্পতিবারের মধ্যেই তদন্ত সম্পন্ন করা যাবে’।

এসআই রতনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ১ ফেব্রুয়ারি সোমবার আদালতে বলেন,‘রোববার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্লাস শেষে বেলা তিনটায় রিকশায় করে ফেরার পথে মোহাম্মদপুরের শিয়া মসজিদের সামনে আদাবর থানার এসআই রতন কুমার হালদার রিকশা থামিয়ে তাকে নামতে বলেন। এ সময় রতনের সঙ্গে দুজন কনস্টেবল ছিলেন। এরপর তাকে একটি দোকানে ঢুকতে বলেন ওই এসআই। ঢোকার পর এসআই রতন তার (ছাত্রী) কাছে ২০০ ইয়াবা আছে বলে দাবি করেন।’

‘দোকান থেকে সবাইকে বের করে দিয়ে তার ব্যাগে তল্লাশি চালানো হয়। তার জ্যাকেট খুলতে বলা হয় এবং নানা ধরনের কটূক্তি করা হয়। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তাকে হয়রানি করা হয়।’

আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং তদন্ত শেষে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমকে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন।

গত মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা গোলাম রাব্বী এবং সিটি করপোরেশনের পরিদর্শক বিকাশ চন্দ্র দাসকে নিপীড়নের ঘটনায় দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হওয়ার আগেই পুলিশের আরেকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ছাত্রী হয়রানির অভিযোগ উঠলো।