নানা নাটকীয়তায় চূড়ান্ত হলো ড. কামাল হোসেন এর নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মধ্যদিয়ে যাত্রা করা এই নতুন এই জোটকে নিজেরা বলেছেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য নবসূচনা।
এই ঐক্যের মধ্যদিয়ে আগামীতে বাংলাদেশের মালিকানা প্রকৃত মালিক তথা বাংলাশের জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে অঙ্গীকার করেন।
শেষ পর্যন্ত এই ঐক্যে আছেন মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে বিএনপি, আ স ম আব্দুর রব এর জেএসডি, মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য এবং ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম।
ঐক্যের পটভূমি
মূলত ২০১৬ সাল থেকেই আলোচনা হচ্ছিলো এই ঐক্য নিয়ে। সর্বপ্রথম গণফোরাম নেতা ও বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতাদের একজন ড. কামাল হোসেন দুর্নীতি, অপরাধ ও অপরাজনীতির বিরুদ্ধে ঐক্যের ডাক দেন।
২০১৬ সালের শেষ দিকে তৃতীয় শক্তি হওয়ার বাসনা নিয়ে গঠন হয় যুক্তফ্রন্ট, যার চেয়ারম্যান হন সাবেক রাষ্ট্রপতি বি. চৌধুরী। এই প্রক্রিয়ায় আছে আ স ম আবদুর রবের জেএসডি এবং নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্নাও।
যুক্তফ্রন্টে থাকার কথা ছিল কামাল হোসেনেরও। তবে দেশের বাইরে থাকা অবস্থায় জোটের ঘোষণা দেয়ায় মনোক্ষুণ্ন হন তিনি। পরে তার সঙ্গে সমঝোতা করতে একাধিক বৈঠকে যুক্তফ্রন্ট আর গণফোরাম একসঙ্গে কাজ করবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।
দেশের জ্যেষ্ঠ নেতাদের এই ঐকবদ্ধ পথচলার শুরুর নাম হয় জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া ও যুক্তফ্রন্ট। তারা শুরু করেন প্রচারণা। নিজেদের দলে টানার চেষ্টা করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে।
অন্তরালে এই কয়েকটি দলের মধ্যে অনেক বৈঠক হয়। আলোচনা হয়, সমালোচনা হয়। মান অভিমান হয়। বিশেষ করে ড. কামাল ও বি. চৌধুরীর মধ্যে। কে এই জোটের মূল নেতৃত্বে থাকবেন তা নিয়েই চলতে থাকে বাকবিতণ্ডা। যার কিছু প্রকাশ্যে আসে, কিছু থেকে যায় অন্তরালেই৷
নিজেদের অভ্যন্তরে এমন বাকবিতণ্ডা, মান অভিমানের মধ্যেই চলতে থাকে ঐক্য প্রক্রিয়ার কাজ।
ঐক্যের প্রাথমিক সূচনা
এই প্রক্রিয়ার প্রথম প্রকাশ হয় গত ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ তে। সেদিন বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া নিয়ে সংবাদ সম্মেলন হয়। সেখান থেকে তাদের দাবি ও লক্ষ্য ঘোষণা করা হয়। তবে অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে সেখানে যাননি বি. চৌধুরী বা তার ছেলে। পরবর্তী সময়ে খুলনার সমাবেশেও যোগ দেননি তারা।
বিএনপির ঘনিষ্ঠতা
জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় বিএনপির অন্তর্ভুক্ত হওয়াটা স্বাভাবিক একটি ব্যাপার। কেননা, ড. কামাল হোসেনরা এমন একটি সময়ে এই ঐক্য প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা শুরু করেন যখন বিএনপি নানা রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক চাপে ধুঁকছে।
৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ যখন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে যাবেন, তার আগেরদিন সংবাদ সম্মেলনে বলে যান, বৃহত্তর ঐক্য ছাড়া এই সরকারকে সরানো যাবে না। তিনি দলীয় নেতাদের বলেন যেন দেশের মানুষকে নিয়ে একটি বৃহত্তর ঐক্য প্রতিষ্ঠা করে স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যায়।
খালেদা জিয়া কারাগাবন্দী হওয়ার পর থেকে বিএনপি চেষ্টা করছিলো একটি বৃহত্তর ঐক্য গড়ার। বিএনপি নেতারা প্রায় প্রতিটি বক্তব্যে ঐক্যকে গুরুত্ব দিয়ে কথা বলেন।
এর মধ্যে আলোচনা শুরু হয় ড. কামাল হোসেন এর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে। অনেক বৈঠক হয়, কথা হয়।
অনেক আলোচনা, দাবি, চাওয়ার পর সর্বশেষ ঐক্য প্রক্রিয়ায় যোগ দেয় বিএনপি। ২২ সেপ্টেম্বর মহানগর নাট্যমঞ্চে কামাল হোসেনের জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সমাবেশে বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেয়।
বিএনপি মহাসচিবের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এতে প্রতিনিধিত্ব করেন।
এই সমাবেশেই যোগ দেন বিকল্পধারার বি. চৌধুরীও। তবে এই জাতীয় ঐক্য হলে নেতৃত্বে কে থাকবেন- সেই প্রশ্নের সুরাহা সেদিন হয়নি।
জাতীয় এই ঐক্যের মধ্যস্থতা করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ড. জাফর উল্লাহ চৌধুরী। আর ঐক্য প্রক্রিয়ার পক্ষ থেকে মধ্যস্থতা করেন মাহমুদুর রহমান মান্না এবং আ স ম আব্দুর রব।
যেসব বিষয়ে সমস্যা ছিল
এই বৃহত্তর ঐক্য গঠনের পেছনে প্রধান দুটি কারণ সামনে আসে৷ এর একটি হলো বিএনপির সঙ্গে স্বাধীনতা বিরোধী দল জামায়াতের ঘনিষ্ঠতা। অন্যদিকে ঐক্যের মধ্যে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচিত না হওয়া।
ঐক্যের নেতারা একযোগে বলে আসছিলেন বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলের একটি দল তথা জামায়াত ছাড়াই বিএনপিকে ঐক্যে আসতে হবে। কিন্তু বিএনপি জামায়াত ছাড়তে রাজি নয়। আবার বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিও ঐক্যের দাবির মধ্যে সম্পৃক্ত হওয়ার দাবি করে বিএনপি।
এর মধ্যে আরেকটি কারণ চলে আসে – জাতীয় সংসদে ভারসাম্যের ভিত্তিতে স্বেচ্ছাচারমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ব্যাপারে কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসা। এটি আসে বিকল্পধারা থেকে।
তবে এসব সমস্যার বাইরেও অন্তরালে অনেক হিসেব নিকেশ নিয়ে আলোচনা হয়।
বিভিন্ন সময়ের সংবাদ পর্যালোচনা করে দেখা যায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এর গোড়াতেই সমস্যা ছিলো। যার মূলে নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব।
বর্তমান সরকারের অনাচার, দুর্নীতি ও গণতন্ত্রহীনতার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের শুরু থেকে একটি বৃহত্তর ঐক্যের ডাক দেন ড. কামাল হোসেন।
এর মধ্যে ২০১৬ সালের শেষের দিকে বি. চৌধুরী ঘোষণা দেন যুক্তফ্রন্ট। যেখানে ছিলেন আ স ম রব এবং মাহমুদুর রহমান মান্না।
এসময় ড. কামাল ছিলেন দেশের বাইরে৷ তার অনুপস্থিতিতে বি. চৌধুরী যুক্তফ্রন্টের ঘোষণা দেয়ায় বিরক্ত হন কামাল। তিনি দেশে আসার পর বহু কথা হয়। আ স ম রব ও মান্নার নেতৃত্বে অনেক চেষ্টা চলে ড. কামালকে বুঝানো হয়।
ঐক্য প্রক্রিয়ার আরো গুরুত্বপূর্ণ ছিলো দুইজন জ্যেষ্ঠ নেতা ড. কামাল ও বি. চৌধুরীদের মধ্যে কে জোট প্রধান হবেন তা নিয়ে চলতে থাকে নানা বাকবিতণ্ডা৷ তার মাঝে আসে বিএনপির নেতৃত্ব।
এক্ষেত্রে বিএনপি ফাঁদে পড়ে নেতৃত্বের বিষয়টি নিয়ে মাথায় ঘামায়নি। তবে এটা ঠিক হয় যে, নির্বাচনে জিতলে সরকারের প্রধানমন্ত্রী হবে বিএনপি থেকেই।
বিভিন্ন সময় আরো একটি সমস্যার বিষয় চলে আসে, সেটি হলো আসন ভাগাভাগি। ১৫০ আসন বিএনপি এবং বাকি আসন ঐক্যের অন্যান্যদের মধ্যে থাকবে এমন কথাও প্রকাশ্যে আসে। তবে এসব বিষয়কে জোটের নেতারা এড়িয়ে যান এবং অপপ্রচার বলে দাবি করেন।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য এই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নাম দিয়ে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। কিন্তু এই ঐক্যের শুরুর দিককার একজন ঐক্যে থাকেননি। যার ফলে তা পূর্ণাঙ্গ রূপ পাওয়ার আগেই বিভেদের ইঙ্গিত মিলেছে।
ঐক্যের আলোচনায় থাকা দুই বর্ষীয়ান নেতা গণফোরামের কামাল হোসেন এবং যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী আলাদা সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন।
শুক্রবার তিন পক্ষের বৈঠকের পর শনিবার ঐক্যের বিষয়ে বক্তব্য দেয়ার কথা ছিল। তার আগে একবার বৈঠকের জন্য ড. কামাল হোসেনের বেইলি রোডের বাসায় আমন্ত্রণ জানানো হয় সবাইকে।
কিন্তু সেখানে ছিলেন না কামাল হোসেন। আর বদরুদ্দোজা চৌধুরী এবং তার ছেলে মাহী বি. চৌধুরী ফিরে যান গণফোরাম নেতার বাসা থেকে।
ফিরে যাওয়ার সময় মাহী বি. চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ড. কামাল হোসেনের আমন্ত্রণে তার বাড়িতে এসেছিলাম। কিন্তু বাসার দরজা খোলেননি কেউ। বি. চৌধুরীর মতো একজন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদকে ডেকে এনে তার সঙ্গে দেখা না করা রাজনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না। এখন বোঝা যাচ্ছে যে ঐক্য কাদের কারণে হচ্ছে না, কেন হচ্ছে না?
পরে বি.চৌধুরী ও তার ছেলেকে ছাড়াই ড. কামাল হোসেন মতিঝিলের চেম্বারে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং যুক্তফ্রন্টের অন্য নেতারা বৈঠকে বসেন।
বৈঠক শেষে জানানো হয়, সন্ধ্যা ছয়টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের তিন তলায় সংবাদ সম্মেলন করবেন কামাল হোসেন। সেখানে বিএনপির শীর্ষ নেতারা থাকতে পারেন।
অন্যদিকে বারিধারার নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলন ডাকেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী। তিনি কামাল হোসেনের আধঘণ্টা পর গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে বিকল্পধারার না থাকার কারণ কী?
দুই শর্ত না মানায় বিকল্পধারা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে থাকেনি বলে জানিয়েছে দলটি।
প্রথমতঃ স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গ ত্যাগ না করা।
দ্বিতীয়তঃ জাতীয় সংসদে ভারসাম্যের ভিত্তিতে স্বেচ্ছাচারমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ব্যাপারে কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসা।
এ দুটি কারণে ঐক্যে না থাকার ঘোষণা দিয়েছেন দলটির সভাপতি একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গ ত্যাগ না করায়, এবং জাতীয় সংসদে ভারসাম্যের ভিত্তিতে স্বেচ্ছাচারমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ব্যাপারে কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত বিএনপিকে এককভাবে ক্ষমতায় বসানোর জন্য কোনো চক্রান্তের সঙ্গে বিকল্পধারা সম্পৃক্ত হবে না।
‘যারা মুক্তিযুদ্ধের শক্তির বাইরে, মহান স্বাধীনতা বিরোধী তারা এখনও বিএনপির সঙ্গে আছে। তাদের বাদ দিয়ে আসতে হবে, পরিষ্কার কথা’
বি. চৌধুরী বলেন, বিএনপি ও ড. কামাল হোসেন আমাদের দুটি দাবি মানলে আমরা ঐক্য প্রক্রিয়ায় আছি। এসময় তারা তাদের এই ঐক্য প্রচেষ্টা সরকারের বিরুদ্ধে বলেও দাবি করেন।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐক্যফ্রন্টের অনেক নেতা জানান, ড. কামাল হোসেন ও বিএনপির কেউ বি. চৌধুরী এবং তার ছেলে মাহী বি. চৌধুরীকে জোটে রাখতে রাজি নন। তাদের সঙ্গে সরকারের আঁতাত রয়েছে বলেও সন্দেহ করছে অনেকে।
এছাড়া মাহি বি. চৌধুরী, বেগম খালেদার জিয়ার মুক্তির বিষয়টি সামনে আনার পক্ষে নেই এবং বিএনপির জামায়াত ছাড়ার ব্যাপারটিও বড় করে সামনে এনে বৃহত্তর জোটের জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছিলেন বলেও জানান অনেকে। যে কারণে শেষ মুহূর্তে আজ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে থাকা থাকা হয়নি বিকল্পধারার।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের গতকাল সংবাদ সম্মেলনের আগে বহুবিধ বিষয় নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা হয়৷
সেখানে বিএনপির সঙ্গে অমীমাসিংত বিষয় গুলো মিমাংসা হওয়ার পর মূলত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়।
যদি জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া এবং বিএনপির দাবি ও লক্ষ্য প্রায় একই৷ শুধু বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিটি গৌণ থাকছিলো। সেটাও সমাধান হয়ে যায়। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফার প্রথম দাবিতেই রাখা হয়েছে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি।
জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আন্দোলনের অংশ হিসেবে সারাদেশে বিক্ষোভ; নির্বাচন কমিশন ঘেরাও ও সরকারকে আলটিমেটাম দিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ; রাষ্ট্রপতি, নিবার্চন কমিশন ও প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেওয়ার মতো বেশকিছু বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জনতার ঐক্য, নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মালিকানা দেশের প্রকৃত মালিক জনগণের হাতে তুলে দেয়ার ব্যাপারে অঙ্গীকার করেন কামাল হোসেন।
বলেন, দেশের সকল মানুষের স্বার্থে, জাতীয় স্বার্থে এই ঐক্যের ডাক। কোটি মানুষের পক্ষে এই উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা ইতিহাসে দেখেছি ঐ ঐক্যের মধ্যদিয়ে বিজয় আসে। জনগণেরই শুধু সরকার গঠনের অধিকার আছে। অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনে যারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করবে তারাই সরকার গঠন করবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নবসূচনার দিন৷
কেননা জাতি গণতন্ত্রের জন্য ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা করেছিলো। জাতি আজকে গণতন্ত্রবিহীন, জাতি প্রতিনিয়ত স্বৈরাচারের অত্যাচারে নিপীড়িত। সে জাতির মুক্তির জন্য গণমানুষের আন্দোলনে নতুন সূচনা হল আজ।
বিএনপি এই ঐক্যকে একটি ঐতিহাসিক ঐক্য এবং দেশের জন্য নবসূচনা বলে দাবি করেছে।
ঘোষণাপত্র পাঠ করেন মাহমুদুর রহমান মান্না৷ ৭ দফা এবং ১১ লক্ষ্য ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করতে চাই যে, বেশ কিছুদিন ধরে চেষ্টা করছিলাম একত্রে হওয়ার। তার আজকে একটি সফল পরিণতি হয়েছে৷ সমগ্র জাতি ঐক্যবদ্ধ না হলে এই লড়াইয়ে সফল হওয়া যাবে না৷ এই প্রত্যয় ঘোষণা করছি যে, এই স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক লড়াই শুরু হলো।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে)