বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট সহচর, দিনাজপুরের সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এম আব্দুর রহিমের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী বুধবার।
এম আব্দুর রহিমের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দিনাজপুরে নানা কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে।
বুধবার সকাল ১০টায় দিনাজপুরে তার কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়ার পাশাপাশি কোরানখানী ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। পরদিন বৃহস্পতিবার রক্তদান কর্মসূচি ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দিয়ে সাধারণ জনগণকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে। আর শুক্রবার জুমার নামাজের পর সদর উপজেলা ও শহরের প্রতিটি মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
আগামী ৭, ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে শিক্ষার্থীদের চিত্রাঙ্গন, রচনা, আবৃত্তি ও সংগীত প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।
আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
এম আব্দুর রহিম হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিমের বাবা। তার চার মেয়ের মধ্যে দুইজন চিকিৎসক।
২০১৬ সালে ৪ সেপ্টেম্বর এম আব্দুর রহিম ৯০ বছর বয়সে ঢাকার বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ১৯২৭ সালের ২১ নভেম্বর দিনাজপুর সদর উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৯ সালে এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের পরের বছর দিনাজপুর বার-এ আইনজীবী হয়ে যোগ দেন তিনি। রাজশাহী কলেজের শহীদ মিনার নির্মাণে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনী প্রচারাভিযানে অংশ নেন এম আব্দুর রহিম।
ঐতিহাসিক আগরতলা মামলার লিগ্যাল এইড কমিটির সদস্য আব্দুর রহিম আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বৃহত্তর দিনাজপুর অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একাত্তরে মুজিবনগর সরকার এম আব্দুর রহিমকে পশ্চিম জোনের চেয়ারম্যান-১ নিযুক্ত করে। আর স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি।
দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগ ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করা আব্দুর রহিম ১৯৯১ সালে দিনাজপুর সদর আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
২০১৮ সালে সরকার এম আব্দুর রহিমকে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পদক’ (মরনোত্তর) প্রদান করে।