মাহের। বয়স ৮ বছর। দক্ষিণ কোরিয়ার একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ছাত্র। মাহেরের মা-বাবা দুজনই বাংলাদেশি। তবে মাহেরের জন্ম বাংলাদেশে নয়, সুদূর আফ্রিকা মহাদেশের মিশরে।
মাহেরের বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন কোরিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা। সরকারি চাকরির সুবাদে জাহাঙ্গীর হোসেন একেক সময় একেক দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে দায়িত্ব পালন করেছেন। সে কারণে মাহেরও হয়ে যায় একেক সময় একেক দেশের।
মাহের এর বয়স যখন ৫ বছর তার বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন বাংলাদেশে যান। সেই সুবাদে মাহেরও প্রথমবার বাংলাদেশ দেখতে পায়। মাহের বাংলাদেশে একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে দেড় বছর পড়ার পর চলে আসতে হয় কোরিয়ায়।
জাহাঙ্গীর হোসেন মিশরের বাংলাদেশ দূতাবাসে থাকাকালীন সময় মাহেরের জন্ম। মাহের মূলত ইংরেজি ভাষায় কথা বলে। তবে সে মায়ের কাছ থেকে বাংলা শিখছে। ইংরেজি-বাংলার মিশ্রণে বাংলায় কথা বলতে পারলেও মাহের পড়তে কিংবা লিখতে পারে না এখনও।
১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গিয়ে মাহেরের সাথে পরিচয় ও কথা হয়।
মহান বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজন করে এ অনুষ্ঠান। সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার কোরিয়ান বাঙালি। যোগ দিয়েছেন তাদের স্ত্রী সন্তানরাও। এ অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনায় আছেন মাহের এর বাবা জাহাঙ্গীর হোসাইন। মাহেরও এসেছে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান উপভোগ করতে।
মাহের বলেছে, সে মাত্র দেড় বছর বাংলাদেশে থাকতে পেরেছে। কথায় কথায় তার কণ্ঠে আক্ষেপ ঝরে পড়লো।
মাহের জানায়, বাংলাদেশকে সে প্রাণের চেয়ে বেশি ভালোবাসে। একদিন ঠিকই বাংলাদেশে বিজয় উৎসব করবে মাহের। তাই সে মায়ের কাছ থেকে বাংলা বলা শিখছে, পড়া এবং লেখাও শিখছে।
মাহের এবারই প্রথম ‘জয় বাংলা’ স্লোগান সম্পর্কে জেনেছে। এখন থেকে সে কোরিয়ায় নিয়মিত বলবে, ‘জয় বাংলা’।