প্রথম ম্যাচে ১৪১ রান নিয়ে শেষ ওভার পর্যন্ত লড়েছিল বাংলাদেশ। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ৫ রান কম করা টাইগারদের ভাগ্যে হার লেখা হয়ে গেল ২০ বল আগেই। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলকে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে পাকিস্তান।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে শনিবার তিন ম্যাচের টি-টুয়েন্টি সিরিজ পাকিস্তান জিতে নিয়েছে ২-০তে। তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ সোমবার, একই মাঠে।
বাংলাদেশ-১৩৬/৬ (২০ ওভার), পাকিস্তান-১৩৭/১ (১৬.৪ ওভার)
দ্বিতীয় ওভারে পাকিস্তান ওপেনার আহসান আলীকে (০) ফিরিয়ে লড়াইয়ের আভাস দিয়েছিলেন শফিউল ইসলাম। পরে বাবর আজম ও মোহাম্মদ হাফিজের নান্দনিক ব্যাটিং শৈলীতে ১৩৭ রানের লক্ষ্যে অনায়াস জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা।
হাফিজ ৬৭ ও বাবর ৬৬ রানে অপরাজিত থেকে ১৬.৪ ওভারে ম্যাচের ইতি টানেন।
হাফিজ খেলেন ৪৯ বল। মারেন নয়টি চার ও একটি ছক্কা। বাবর ৪৪ বলের ইনিংসে মারেন সাতটি চার, একটি ছক্কা। দুই ব্যাটসম্যানের ১৩১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশের বোলাররা।
৪ ওভারের কোটা শেষ করেছেন কেবল মেহেদী হাসান। এ অফস্পিনার দিয়েছেন ২৮ রান। আল-আমিন হোসেন ৩ ওভারে ১৭ রান। খরুচে ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। ৩ ওভারে দিয়েছেন ২৯ রান।
পাকিস্তানের একমাত্র উইকেটটি নেয়া শফিউল ৩ ওভারে দিয়েছেন ২৭ রান। লেগস্পিনার আমিনুল ইসলাম ২ ওভারে ১৬ রান দিয়েছেন। আফিফ হোসেন এক ওভারেই খরচ করেন আমিনুলের সমান ১৬ রান।
আগে প্রথম ম্যাচের মতোই ধীরগতিতে এগিয়ে চলা তামিম ইকবাল খোলস খোলেন ইনিংসের ১৬তম ওভারে। লেগস্পিনার শাদাব খানকে তিন চার মেরে তুলে নেন ১৪ রান। ওই ওভারেই ফিফটি ছোঁয়া টাইগার ওপেনার রানআউট হয়ে ফেরার আগে খেলে যান ৫৩ বলে ৬৫ রানের ইনিংস। তারপর সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে দেড়শ পর্যন্তও যেতে পারেনি বাংলাদেশ।
সিরিজের দ্বিতীয় টি-টুয়েন্টি ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৩৬ রান তোলে মাহমুদউল্লাহর দল। সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১৪১ রান করে ৫ উইকেটে হেরেছিল সফরকারীরা।
তামিম ছাড়া দুইঅঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন কেবল আফিফ হোসেন (২১) ও মাহমুদউল্লাহ (১২)। তামিমের লড়াকু ইনিংসটিতে ছিল সাতটি চার ও একটি ছয়ের মার।
তামিমের ওপেনিং পার্টনার নাঈম শেখ ফিরে যান দ্বিতীয় ওভারেই। পাকিস্তানের তরুণ পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি তুলে নেন এ বাঁহাতির উইকেট। গোল্ডেন ডাক পিছিয়ে দেয় বাংলাদেশকে। দলীয় সংগ্রহ তখন ৫ রান।
ঢাকা প্লাটুনের হয়ে বিপিএল মাতিয়ে জাতীয় দলে ফেরা মেহেদী হাসান শুরু করেছিলেন দুর্দান্ত। বাঁহাতি স্পিনার ইমাদ ওয়াসিমকে ছক্কা মেরে দিয়েছিলেন দারুণ কিছুর আভাস। কিন্তু থেমে যেতে হয় দ্রুতই। মোহাম্মদ হাসনাইনের স্লো-বাউন্সারে পুল করতে গেলে ব্যাটের কানায় লেগে বল উঠে যায় আকাশে। সহজ ক্যাচ লুফে নেন উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ান। ৯ রানে থামে ইনিংস।
২২ রানে ২ উইকেট হারালে চাপ বাড়ে তামিমের উপর। এ ওপেনার সময়ের দাবি মেটান ঝুঁকিহীন ব্যাটিং করে। তামিম একপ্রান্ত আগলে রাখলেও উইকেট পড়ে নিয়মিত বিরতিতে।
লিটন দাস ১৪ বল খরচ করে সাজঘরে ফেরেন ৮ রান করে। শাদাবের বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি। রিভিউ নিয়ে দেখেন বল লেগস্টাম্প হাওয়া দিয়ে বেরিয়ে যেত। কিন্তু আম্পায়ার্স কলে কাটা পড়েন লিটন। বাংলাদেশের সংগ্রহ তখন ৭.৫ ওভারে ৪১ রান।
আফিফ হোসেনের সঙ্গে তামিমের চতুর্থ উইকেট জুটি জমে ওঠে দারুণ। ৪৫ রানের জুটি ভাঙে আফিফ আউট হলে। এ বাঁহাতি ২০ বলে একটি করে চার-ছক্কায় করেন ২১ রান।
অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ১২ বলে করেন ১২ রান। সৌম্য সরকার ৫ বলে ৫ ও আমিনুল ইসলাম ৪ বলে ৮ রানে অপরাজিত থাকেন। যে রানগুলো শেষপর্যন্ত পর্যাপ্ত প্রমাণিত হল না।