চীনের প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস ইতোমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। জাপান, সাউথ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, নেপাল, ফ্রান্স ও সৌদি আরবসহ অন্তত ১১টি দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলেছে।
চীনে এ ভাইরাসে চল্লিশ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যাও সহস্রাধিক। এমন প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন দেশ করোনা ভাইরাস ঠেকাতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এসব পদক্ষেপের মধ্যে চীনের প্রধান প্রধান পর্যটন এলাকা ও গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়া, হংকংয়ে আন্তর্জাতিক কার্নিভাল, বার্ষিক ফুটবল টুর্নামেন্ট, সাংহাইয়ের ডিজনি রিসোর্ট সাময়িকভাবে বন্ধসহ একাধিক শহরে ম্যাকডোনাল্ডসের রেস্টুরেন্ট বন্ধ করা অন্যতম।
এছাড়াও বিশ্বজুড়ে ভাইরাসটির ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশের বিমানবন্দরগুলোতে যাত্রীদের পরীক্ষা করা হচ্ছে। বিশেষ করে চীন ফেরত যাত্রীদের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্যানার বসানো হয়েছে। সব বন্দরে জারি করা হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতা।
ভৌগলিক অবস্থান এবং চীন থেকে আসা যাত্রীদের কারণে করোনা ভাইরাস বাংলাদেশে আসার ঝুঁকি রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিমানবন্দরেরর সবকটি এরাইভেল গেটে স্থাপন করা হয়েছে থারমাল স্ক্যানার। বিদেশ থেকে সব ফ্লাইটে আসা যাত্রীদের বিশেষ করে ঢাকায় চীন থেকে আসা প্রতিদিনের ৪টি ফ্লাইটের যাত্রীদের বিশেষ গুরুত্বের সাথে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ঢাকায় প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে শাহজালাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের এ পদক্ষেপ প্রশংসনীয়। তবে করোনা ভাইরাস যেভাবে দ্রুত গতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে উঠছে তা বিবেচনায় রেখে আরও সতর্কতা অবলম্বনের কোনো বিকল্প নেই। একই সঙ্গে চীনে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের সুরক্ষায় সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাস যাতে সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করে তা সংশ্লিষ্টদের নিশ্চিত করতে হবে।
চীনের বাংলাদেশ দূতাবাস এ বিষয়ে ইতোমধ্যে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত শহর উহানে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা এর সুফল না পাওয়া এবং গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সেখানে আটকা পড়ার কথা চ্যানেল আইয়ের ফেসবুক পেজে জানিয়েছেন। এ অভিযোগ আমলে নিয়ে চীনে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের সুরক্ষায় দূতাবাস যথাযথ পদক্ষেপ নেবে বলে আমরা আশা করছি।
দেশে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার পাশাপাশি চীনে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের কারও অবহেলায় যেন একজন বাংলাদেশিও করোনা ভাইরাসে ভোগান্তির শিকার না হন তা নিশ্চিত করতে আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।