২০১৯-২০ মৌসুম নিয়ে বেশ আশাবাদী ছিলেন বার্সেলোনা সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্তেমেউ। প্রথমবারের মত এই মৌসুমেই ক্লাবের আয় এক বিলিয়ন ইউরো ছাড়াবে- এমন ঘোষণা বেশ গর্বের সাথেই গতবছরও দিতে দেখা গেছে তাকে। শুধু তাই নয়, সেই আয় দিয়ে নেইমার-লাউতারো মার্টিনেজকে কিনে মেসির সঙ্গী বানাবেন। দলবদলে আগের মৌসুমগুলোর মত দু’হাতে অর্থ ঢালবেন; কত আশ্বাসই না দিয়েছিলেন বার্সা সভাপতি!
কিন্তু ভবিষ্যৎ যে মানুষের নিয়ন্ত্রণে নেই সেটা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন বার্তেমেউ। আসলে তাকে টের পাওয়াচ্ছে করোনা ভাইরাস নামের এক মহামারী। বৈশ্বিক এই মহামারীতে স্থবির হয়েছে বিশ্ব অর্থনীতি, বন্ধ হয়েছে দর্শকদের মাঠে এসে খেলা দেখা, ভেঙেছে বার্তেমেউয়ের এক বিলিয়ন ইউরো আয়ের স্বপ্ন আর দ্বিগুণ হয়েছে দেনা।
সোমবার ২০১৯-২০ মৌসুমে বার্সার আর্থিক লাভ-লোকসানের খতিয়ান নিয়ে গণমাধ্যমের সামনে এসেছিলেন ক্লাবের ভাইস-প্রেসিডেন্ট জর্ডি মইক্স। তার হিসেবেই উঠে এসেছে লোকসানের দিক থেকে ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলোর মধ্যে বার্সার অবস্থান দুইয়ে। ২০১৯-২০ মৌসুমে কাতালান ক্লাবটির ক্ষতি হয়েছে ৯৭ মিলিয়ন ইউরো। ১১০ মিলিয়ন ইউরো লোকসান নিয়ে সবার শীর্ষে ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, তিনে থাকা জুভেন্টাসের ক্ষতি ৭১ মিলিয়ন ইউরো।
গত মৌসুমে বার্সার প্রত্যাশিত আয় ছিলো ১ হাজার ৪৭ মিলিয়ন ইউরো, মৌসুম শেষে আয় হয়েছে ৮৫৫ মিলিয়ন। মাত্র এক মৌসুমে দেনাও হয়েছে দ্বিগুণ। ২০১৮-১৯ মৌসুম শেষে যেখানে দেনা ছিলো ২১৭ মিলিয়ন ইউরো, ২০১৯-২০ মৌসুম শেষে সেটা এক লাফে হয়েছে ৪৮৮ মিলিয়ন।
দেনার ভারে জর্জরিত হয়ে তাই খরচ কমানোর দিকে নজর দিয়েছে ক্লাবটি। এরইমধ্যে লুইস সুয়ারেজ, আর্তুরো ভিদাল, ইভান রাকিটিচ, নেলসন সেমেডোওকে ছেড়ে দিয়ে ৪২ মিলিয়ন ইউরো বেতন কমিয়েছে ক্লাবটি, অন্যান্য খাতেও কাটছাঁট করা হয়েছে ৩০ মিলিয়ন ইউরো। প্রত্যাশিত বাজেট কমিয়ে ২০২০-২১ মৌসুমের জন্য খরচ ধরা হয়েছে ৭৯১ মিলিয়ন ইউরো।
তবে দ্রুতই অবস্থা পাল্টাবে বলে বিশ্বাস বার্সার। নভেম্বর থেকে অল্প অল্প করে মাঠে ঢোকানো হবে দর্শক, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি নাগাদ পুরো ন্যু ক্যাম্প দর্শক দিয়ে ভরে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর দর্শক এলে বাজেটের ২৫ শতাংশ আয় উঠে আসবে বলে মনে করে ক্লাবটি।