পৃথ্বী শ নামের এক বিস্ময়বালক ভারতীয় ক্রিকেটে আসছে, এমন আলোচনা অনেকদিন ধরেই। শচীনও শুনেছিলেন সেটি। তারপর একদিন দেখা করেন। নেটে একটু দেখেই শচীন বলে দেন, এই ছেলে একদিন ভারতের হয়ে খেলবে।
শচীনের কথা সত্যি প্রমাণিত হয়েছে। মাত্র ১৮ বছর বয়সে পৃথ্বী ভারতের হয়ে টেস্ট খেলতে নেমেছেন। বৃহস্পতিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে রাজকোটে দেশটির সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেকে পেয়েছেন সেঞ্চুরি। রঞ্জি, দলীপ ট্রফি ও টেস্ট ক্রিকেট; সবখানে অভিষেক ম্যাচেই সেঞ্চুরির নজির গড়েছেন এই দুরন্ত প্রতিভা।
টেন্ডুলকারের মতো পৃথ্বীও মুম্বাইয়ের ছেলে। এই শহরের ক্রিকেট কর্তারা পৃথ্বীর অনেক পরিচর্যা করে এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন।
পৃথ্বীকে দেখার স্মৃতি স্মরণ করে টেন্ডুলকার টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘‘জগদীশ নামে আমার এক বন্ধু একদিন পৃথ্বীকে দেখতে বলেছিল। ও জানায় ছেলেটি আমার সঙ্গে দেখা করতে চায়। তখন ও খুব ছোট।’
‘‘একদিন দেখা হয় পৃথ্বীর সঙ্গে। প্রথম দর্শনেই জগদীশকে বলেছিলাম, এই ছেলে একদিন ভারতের হয়ে খেলবে। আমার এখনো মনে আছে ওকে সেদিন বলেছিলাম, ‘তোমাকে দেখে ভবিষ্যতের ভারতীয় ক্রিকেটার মনে হচ্ছে। আমার কথা মনে রেখ, একদিন তুমি ভারতের হয়ে খেলবে।’
রাজকোটে পৃথ্বীর ইনিংস দেখে মনে হয়েছে ব্যাকফুটে দারুণ দক্ষতা রয়েছে। শট খেলতে অনেক সময় পান। বিদেশের মাটিতে এই দক্ষতা কার্যকরী হতে পারে।
ছেলেবেলার পৃথ্বীর ভেতর টেন্ডুলকার কী দেখেছিলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘যেভাবে সে বলের সঙ্গে চোখের সমন্বয় করে সেটি সত্যি অসাধারণ। লাইন, লেংথ ধরতে পারে দারুণভাবে। ওই বয়সে ব্যাটিংয়ে কেউ শক্তি প্রয়োগ করতে পারে না। বয়সের সঙ্গে চলে আসে। কিন্তু টেকনিক কজনের ঠিক থাকে? তখনই বলেছিলাম, পৃথ্বী ন্যাচারাল ট্যালেন্ট, একটা উপহার। আমার মনে হয়েছিল, সবার ভেতর এই গুণ থাকে না।’
টেকনিকে পৃথ্বী প্রায় নিখুঁত হলেও তার গ্রিপ নিয়ে অনেক কোচই খুশি নন। কিন্তু টেন্ডুলকার তাকে বলেছিলেন, কিছুই পরিবর্তন করার দরকার নেই, ‘যদি কেউ তোমাকে ব্যাটিং গ্রিপ পরিবর্তন করতে বলে, তাহলে তাকে আমার সঙ্গে কথা বলতে বলবে।’
শচীনের মতো অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কোচ রাহুল দ্রাবিড়ও পৃথ্বীকে একই কথা বলেছিলেন। দ্রাবিড়ের পরামর্শ ছিল এমন, ‘যদি তুমি রান পাও, তাহলে চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই।’