চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

এক জীবনে এক হাজার জীবনের সঙ্গে পরিচয় করায় বই

এরই মধ্যে ঘুরে ফেলেছেন সারা বিশ্বের প্রায় ৩১ টি দেশ। তার মধ্যে ২৪ টি ভ্রমণ নিয়েই তৈরি হয়েছে ভ্রমনকাহিনী। এবারের বইমেলাতেও প্রকাশিত হয়েছে তার লেখা একটি বই। লেখকের নাম মিতালী হোসেন। তার লেখা বইটির নাম ‘তুরস্ক যাত্রীর ডায়েরি’। 

দেশের ভেতরে বসে তো বটেই দেশের বাইরে গেলেও যখনই দেশের নাম শুনেন বা দেশের কারো প্রশংসা শুনেন তখনই খুশি হয়ে যান মিতালী হোসেন। বলেন, আগে হাতে গোনা কিছু মানুষ আমাদের দেশের নাম জানতো আর এখন অনেকেই এদেশের নাম, বিশেষ করে খেলোয়াড়দের নাম জানে। ওরা আজ নাসিরকে চেনে, সাকিবকে চেনে, মাশরাফি- মুশফিককে চেনে। 

তাছাড়া আর একটি কথা না বললেই নয় সেটি হলো, একবার আমি আমেরিকায় গেছি। সেখানে একটি শপিং মলে গিয়ে দেখি ড. মোহাম্মদ ইউনূসের তিন তলার সমান উচু একটি ছবি টানানো আর তার নিচে কয়েকজন লোক টেবিল চেয়ার নিয়ে বসে আছে। আমি ওদের কাছে গেলাম। ওরা বললো, ওরা ইউনূসের সামাজিক ব্যবসার থিওরি নিয়ে কাজ করছে। তবে ইউনূসের সঙ্গে তাদের কোনো ধরনের ব্যক্তিগত যোগাযোগ বা প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ নেই।

অনেক দেশ ঘুরেছেন, দেখেছেন অনেক ইতিহাস, অনেক মানুষের সঙ্গে পরিচয়ও হয়েছে। তবে এখন তার ইচ্ছে লাতিন আমেরিকায় ঘুরে আসা। পেরু আর ব্রাজিলে একবার পা রাখতে চান তিনি। যদিও জানেন সেটা খুব সহজ হবে না। এজন্য কম ঝক্কি হয়তো আসবে না। যাওয়ার কষ্টটাও নেহাত কম নয়। কিন্তু সেই এলাকা ঘুরে এসে একটি ভ্রমণ কাহিনী লেখার স্বপ্ন দেখেন এই লেখক। 

ঘুরছেন, লিখছেন এবং বই প্রকাশ করছেন। এত কিছুর পর পাঠকের কাছে তার চাওয়া, বই পড়ার অভ্যাস গড়ুন। কারণ বই-ই পারে আমাদের এক জীবনে এক হাজার জীবন দেখার সুযোগ করে দিতে। তাই সবারই বই পড়ার ইচ্ছেটা থাকা উচিত। 

এরই মধ্যে প্রায় ৩১ টি বই লিখেছেন মিতালী হোসাইন। তবে এত সব বইয়ের মধ্যে তার নিজের লেখা সবচেয়ে পছন্দের বই হলো, একাত্তরে আমি। লেখক বলেন, ১৯৭১ সালে আমার বয়স ১০ । ওই সময়ে আমি আমার বাবার সঙ্গে একটি ক্যাম্পে ছিলাম। রৌমারির সেই ক্যাম্পে থাকার সময় আমি যতটুকু দেখেছি মুক্তিযুদ্ধকে সেটাই আমি তুলে আনার চেষ্টা করেছি এই বইটিতে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের যে একটি বেশ লম্বা ইতিহাস রয়েছে সেটারও আমি যতটুকু জানি তা জানাতে চেয়েছি বইটির মধ্যে দিয়ে।  

এবারের বইটিও যেমন পছন্দের মিতালী হোসেনের তেমনই পছন্দের ছিলো এবারের ভ্রমণও। তিনি বলেন, আমি অনেক দেশে গেছি কিন্তু কোথাও ধর্ম, ইতিহাস, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্য সেভাবে মিশে না। কিন্তু তুরস্কে সেটা ঠিকই পাশাপাশি সুন্দরভাবে অবস্থান করেছে। কোনোটার সঙ্গে কোনোটা ওভারল্যাপ করে নি। এই বিষয়টা খুবই ভালো লেগেছে। 

দেশের সাহিত্য দেশের বাইরে ছড়িয়ে দিতে অনুবাদের কোনো বিকল্প নেই বলেই মনে করেন এই লেখক। তবে পাশাপাশি তিনি বলেন, দেশের বাইরে এখন অনেক বাংলাদেশী বসবাস করে। তারাও অনেকসময় ঠিকঠাক পড়ার মতো বই পায় না। একবার যেমন সাউথ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে হাতে গোনা কয়েকজন বাংলাদেশী ছিলো। তাদের সঙ্গে কথা হচ্ছিলো, তারা বলছিলো বই পড়ার জন্য কতটা মন কাঁদে তাদের। আমি ওখানে যাওয়ার সময় পড়ার জন্য যে বই বা ম্যাগাজিনগুলো নিয়ে গিয়েছিলাম, সেগুলো দিয়ে দিলাম। কি যে খুশি হয়েছিলো ওরা। যদি দেশের বাইরে বাংলাদেশীদের কাছে বই পৌঁছে দেওয়া যেত তাহলেও একটা কাজ হতো। 

মিতালী হেসেনের লেখা ‘তুরস্ক যাত্রীর ডায়েরি’ বইটি প্রকাশ করেছে পারিজাত প্রকাশনী। ধ্রুব এষের প্রচ্ছদে বইটি মেলার প্রথম দিন থেকেই পাওয়া যাচ্ছে অমর একুশে গ্রন্থমেলার ১৬৪ ও ১৬৫ নাম্বার স্টলে। বইটির গায়ের দাম ১৫০ টাকা।