পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল রাখতে এবার উড়োজাহাজে করে পেঁয়াজ আনছে আমদানিকারক দুই প্রতিষ্ঠান। মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ এবং এস আলম গ্রুপ পেঁয়াজের বড় চালান আনতে যাচ্ছে। এস আলম গ্রুপের পেঁয়াজ আজ রাতে দেশে এসেছে আর আগামীকাল ২২ নভেম্বর তার্কিশ এয়ারলাইন্সে মেঘনা গ্রুপের পেঁয়াজের প্রথম চালান ঢাকায় এসে পৌঁছবে।
মেঘনা গ্রুপ ও এস আলম গ্রুপের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মেঘনা গ্রুপের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার ও ভোক্তা সাধারণের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ। এই গ্রুপের প্রথম চালান ২২ নভেম্বর তার্কিশ এয়ারলাইন্সে ঢাকায় এসে পৌঁছবে। আরো কয়েকটি উড়োজাহাজে এই মেঘনা গ্রুপের আমদানিকৃত পেঁয়াজ আসবে। এবং আমদানি অব্যাহত থাকবে। এছাড়া এই গ্রুপের ১২ থেকে ১৫ হাজার টন পেঁয়াজ সমুদ্র পথে ১ ডিসেম্বর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে আসা শুরু করবে। যা পরিবর্তী সময়ে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবিকে হস্তান্তর কারা হবে। এর ফলে পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক ও জনমনে স্বস্তি ফিরে আসবে বলে বিশ্বাস করে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফা কামাল।
এতে আরো বলা হয়, লবণ নিয়ে বাজারে কৃতিম সংকট সৃষ্টির অপচেষ্টা নিয়ন্ত্রণ প্রতিহত করার জন্য মেঘনা গ্রুপ সরকারের সব স্তরের প্রশাসন, অন্যান্য প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠান, পরিবেশক ও খুচরা বিক্রেতাদের সাথে সক্রিয় সহযোগীতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
এছাড়া বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় বিসমিল্লাহ এয়ার লাইন্সের কার্গো উড়োজাহাজে করে এস আলম গ্রুপের আরও ১০৫ টন পেঁয়াজ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পৌঁছানোর কথা রয়েছে।আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। এছাড়া আগামীকাল শুক্রবার ৫৫ টনের একটি চালান আসবে। এভাবে একের পর এক পেঁয়াজের চালান আসবে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ বকসি চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, গতকাল (বুধবার) রাত ১টার সময় এস আলম গ্রুপের একটা চালান এসেছে। আজ সন্ধ্যায় ৬ টায় কার্গো বিমানে একটা চালান আসছে। সেখানে ১০৫ টন পেঁয়াজ রয়েছে। আগামীকাল আসবে ৫৫ টন। এবং এটা প্রতিদিনই অব্যাহত থাকবে।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ার পর বাংলাদেশে হু হু করে বেড়ে যায় পেঁয়াজের দাম। এক পর্যায়ে তা কমবেশি ২৫০ টাকায় গিয়ে ঠেকে। এরপর সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু জলপথে জাজাহে পেঁয়াজ আসতে এক মাসের বেশি সময় লেগে যায়। এতে পেঁয়াজের দাম আরো বেড়ে যায় ও ঘাটতি দেখা দেয়। এরপর দ্রুত ঘাটতি মেটাতে আকাশ পথে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এর প্রেক্ষিতে এস আলম গ্রুপ মিসর ও তুরস্ক থেকে বাল্ক ও কন্টেইনারের মাধ্যমে সমুদ্রপথে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৫৮ হাজার ৫০০ টন পেঁয়াজ আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়। কিন্তু সমুদ্রপথে পেঁয়াজ আমদানিতে বেশি সময় লেগে যাওয়ায় আকাশপথে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত হয়।
জানা গেছে, ২০ নভেম্বর রাত থেকে আকাশপথে আমদানিকৃত পেঁয়াজ দেশে পৌঁছতে শুরু করেছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় বিসমিল্লাহ এয়ার লাইন্সের কার্গো উড়োজাহাজে ১০৫ টন পেঁয়াজ বিমানবন্দরে পৌঁছবে। ২২ নভেম্বর কায়রো এয়ারের একটি কার্গো উড়োজাহাজে আরও ৫৫ টন পেঁয়াজ ঢাকায় পৌঁছবে। এভাবে চাহিদা মোতাবেক পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত থাকবে। এস আলম গ্রুপের আমদানিকৃত পেঁয়াজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে নির্ধারিত মূল্যে বাজারজাত করা হবে।