রাজধানীর দারুস সালাম থানাধীন কল্যাণপুর এলাকায় দুটি প্রাইভেট কারের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। পেছন থেকে দ্রুত গতির অপর একটি প্রাইভেটকার সজোরে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই ওই দুইজন সহায়তাকারীসহ নষ্ট প্রাইভেটকারের চালক ঘটনাস্থলেই মারা যান। কল্যাণপুর খালেক পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন রাস্তায় পূর্ব পাশে রোববার রাতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঈদের দিন সকালে দেশের জনগণ এই সংবাদ দেখে দিন শুরু করেছে।
ঈদ বা যেকোনো ছুটির সময়ে রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকলে এধরণের ঘটনা ঘটে থাকে। ট্রাফিক পুলিশ ও প্রশাসনের শত চেষ্টার পরেও বছর বছর এগুলো হয়ে আসছে। এবছর করোনার কারণে সারাদেশে গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে, সড়ক-মহাসড়ক প্রায় ফাঁকা বললেই চলে। আর ফাঁকা থাকার কারণে ও ঈদযাত্রায় যাত্রীরা ব্যক্তিগত গাড়ি, পণ্যবাহী যান ও মোটরসাইকেলকে বেছে নিয়েছেন। ঈদের আগে ৪ দিন, ঈদের দিন ও ঈদের পরের ২ দিন সব ধরনের যান চলাচলে কঠোর থাকার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। অথচ মানুষ ইতোমধ্যে অন্যান্য বছরের মতোই ঈদযাত্রার আমেজ নিয়ে ছুটছে বাড়ির দিকে।
ইতিমধ্যে বড় আকারের দুর্ঘটনাও দেখা গেছে মহাসড়কে। গত ২১ মে ঢাকা থেকে দিনাজপুরগামী রড বোঝাই ট্রাকে যাত্রী বহন করতে গিয়ে ট্রাক উল্টে রডের নীচে চাপা পড়ে শিশুসহ ১৩ জন নিহত হয়েছে। গত ৩/৪ দিনেও অনেকে নিহত হয়েছে। ঈদযাত্রায় এধরণের অপ্রচলিত বাহনে দূরযাত্রা ঠেকাতে না পারলে সরকার করোনা প্রতিরোধ ও সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে করতে পারবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। সরকারও চেষ্টা করছে, কিন্তু কিছুতেই যেন কিছু হচ্ছে না।
গত এপ্রিল মাসে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশব্যাপী পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকলেও এ সময়ে ২০১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২১১ জন নিহত ও ২২৭ জন আহত হয়েছেন। একই সময় নৌ-পথে ৮টি দুর্ঘটনায় ৮ জন নিহত, ২ জন আহত ও ২ জন নিখোঁজ হয়েছে।
এখন পর্যন্ত ৩১ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটির মেয়াদ রয়েছে, ২৮ মে আবারও নতুন করে ঘোষণা আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই সময় পর্যন্ত যারা রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর বাইরে আছে, তারা ছুটি শেষ হবার আগে ও পরে কর্মস্থলে ফিরে আসার চেষ্টা করবে। এইসময়ে গণপরিবহণ বন্ধ থাকলে অপ্রচলিত ও ঝুঁকিপূর্ণ বাহনে ফেরা চেষ্টা করবে। ফলত নতুন করে সড়কে মৃত্যুর মিছিল দেখা যেতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। এ বিষয়ে একটি সুপরিকল্পিত গণপরিবহন নীতি দ্রুত নেয়া খুবই জরুরি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেবেন বলে আমাদের আশাবাদ।