নতুন যে ইনজুরিতে পড়েছেন নেইমার, সেই ইনজুরি বেশ গুরুতর এবং বিশ্বকাপের আগে যেমন ইনজুরিতে পড়েছিলেন ঠিক তেমনই, লাগবে অস্ত্রোপচারও। নিশ্চিত হয়েছে অন্তত তিন সপ্তাহ থাকতে হবে মাঠের বাইরে। এবার চিকিৎসা টিমের এক সূত্রে ইএসপিএন এফসি জানাচ্ছে, টানা দ্বিতীয়বারের মতো ইনজুরির কারণে মৌসুম শেষ হয়ে যেতে পারে নেইমারের।
গত বুধবার স্ট্রসবুর্গের বিপক্ষে ফরাসি লিগ কাপের ম্যাচে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের ট্যাকলে ডান পায়ে চোট পান নেইমার। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া বিশ্বকাপের ঠিক আগে এই পায়ের মেটাটারসাল হাড় ভেঙে মৌসুম আর শেষ করতে পারেননি ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।
বৃহস্পতিবার বিবৃতিতে পিএসজি জানায়, নেইমার আঘাত পেয়েছেন ঠিক সেই জায়গাতেই।
আগে এমন ইনজুরিতেই অস্ত্রোপচার করতে হয়েছিল নেইমারকে। এবারও সেই ডান পায়ে অস্ত্রোপচার লাগতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতেও একই রকম ইনজুরিতে পড়েছিলেন নেইমার। তখন তাকে লম্বা সময় মাঠের বাইরে থাকতে হয়। বিশ্বকাপের আগে ফিট হলেও রাশিয়া সেরা নেইমারকে দেখা যায়নি।
১২ ফেব্রুয়ারি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর প্রথম লেগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে ওল্ড ট্রাফোর্ডে যাবে পিএসজি। ইনজুরিতে পড়ার পর থেকে এটাই হট-টপিক যে, নেইমার ওই ম্যাচে খেলতে পারবেন কিনা।
নেইমারের ইনজুরিতে পিএসজির মতো চিন্তায় আছে তার জাতীয় দলও। বিশেষ করে সামনে ঘরের মাঠের কোপা আমেরিকা টুর্নামেন্ট নিয়ে। ম্যানইউর বিপক্ষে নেইমার দলে ফিরতে পারবেন কিনা তার চেয়েও অনেক বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে, তিনি আগামী গ্রীষ্মে শতভাগ ফিট থেকে কোপা আমেরিকায় খেলতে পারবেন কিনা।
তাকে নিয়ে ব্রাজিল এতটাই সিরিয়াস যে, এরইমধ্যে জাতীয় দলের চিকিৎসক রদ্রিগো লাসমারকে ফ্রান্সে পাঠিয়েছে তারা।
নেইমারের পুরো অবস্থা পিএসজি এবং ব্রাজিল জাতীয় দলের কর্মকর্তারা জানলেও এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে কিছু বলছেন না। তবে ইএসপিএন সূত্র বলছে, নেইমারের অস্ত্রোপচারটা কোথায় হবে সেটা নিয়েই ক্লাব এবং জাতীয় দলের বিতর্ক চলছে।
যদিও ব্রাজিল কোচ টিটে জানিয়েছেন, অর্ধেক ফিট নেইমারকে দলে ডাকবেন না তিনি। নেইমারে অবস্থা কথা জানাতে গিয়ে ব্রাজিল কোচ বলেন, ‘আমরা নেইমারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি এবং তার সঙ্গে কথাও হয়েছে। এটা ছিল একান্তই ব্যক্তিগত পর্যায়ের এবং মানবিক। চিকিৎসক দল সেখানে (প্যারিস) গেছেন তারা বিষয়টি দেখবেন। আমার যোগাযোগটা শুধুই মানবিক ছিল। আমি জানি আপনারা সবাই এই বিষয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। আমি উদ্বেগটা বুঝতে পারি, কিন্তু আমি অনুমানের উপর ভর করে কোনো কথা বলতে পারি না।’
ব্রাজিল জাতীয় দলের ডিরেক্টর গাসপার জানিয়েছেন, লাসমারের পূর্ণ রিপোর্ট পেলেই ব্রাজিলের কর্মকর্তারা সেটা মূল্যায়ন করবেন এবং পুরো বিষয়টা জানাতে পারবেন। তিনি বলেন, ‘এটা মনে রাখতে হবে নেইমার পিএসজির খেলোয়াড়। তাই ক্লাব যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাকে আমাদের শ্রদ্ধা জানাতে হবে। আমাদের চিকিৎসক লাসমার তাদের সহায়তা করবেন। তারপরে, আমরা টেনকিক্যাল সিদ্ধান্ত নেয়ার চিন্তা করব। পিএসজি বরং এই বিষয়ে রক্ষণশীল হচ্ছে। তারা শেষ সিদ্ধান্তে সহায়তা করার জন্যই লাসমার ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে।’
নেইমারের যদি শেষ পর্যন্ত অস্ত্রোপচার লাগেই, সেক্ষেত্রে বড় ভয়ের কথাই জানাচ্ছে ইএসপিএন সূত্র। তারা বলছে, এই দফায় তার সেরে ওঠার সময় আগেরবারের চেয়েও লম্বা হবে। আর সেটা মৌসুমের একেবারে শেষ পর্যন্ত। সেক্ষেত্রে অবশ্য ঘরের মাঠে কোপা আমেরিকা খেলাও বেশ হুমকিতে পড়বে নেইমারের।