নিষেধাজ্ঞা না মেনে ইটালিতে অভিবাসীবাহী দু’টি জাহাজ নোঙর করে আটকে যাওয়ার পর অপেক্ষমাণ তৃতীয় জাহাজের অভিবাসীদের গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
‘আয়লান কুর্দি’ নামে ওই অভিবাসী উদ্ধার জাহাজটি ইটালির ল্যাম্পেডুসা বন্দরের ঠিক বাইরে ইটালিতে ঢোকার আশায় শনিবার পর্যন্ত আন্তর্জাতিক জলসীমায় অপেক্ষা করে ছিল। কিন্তু ইটালি সরকার কিছুতেই সেই অনুমতি দেয়নি।
জার্মান দাতব্য এনজিও সি-আই পরিচালিত জাহাজটিতে ৬৫ জন অভিবাসন প্রত্যাশী আছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
লিবিয়া উপকূল থেকে উদ্ধার করে আনা ওই অভিবাসীদেরকে নিয়ে জাহাজটিকে রোববার নিজ বন্দরে নোঙর করার অনুমতি দেয় মাল্টা সরকার। তখনই আয়লান কুর্দি আরোহীদের নিয়ে মাল্টা বন্দরের উদ্দেশে রওনা দেয়।
পরে জাহাজটি থেকে মাল্টার নৌবাহিনী আরোহীদের উদ্ধার করে তীরে নিয়ে আসে।
একটু নিরাপত্তার আশায় ভূমধ্যসাগর অতিক্রমের চেষ্টায় মৃত সিরীয় শিশু আয়লান কুর্দির নামে রাখা হয়েছে এই অভিবাসী উদ্ধারকারী জাহাজটির নাম। জাহাজে থাকা তিনজন অভিবাসী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর পাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর মাল্টা সরকার আয়লান কুর্দিকে নোঙর করার অনুমতি দেয় বলে জানিয়েছে বিবিসি।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী জোসেফ মাসকাট জানিয়েছেন, ইউরোপীয় কমিশন এবং জার্মান সরকারের সঙ্গে ইতোমধ্যে তার কথা হয়েছে। দুই পক্ষই আশ্বাস দিয়েছে, মাল্টা আপাতত এই ৬৫ অভিবাসন প্রত্যাশীকে গ্রহণ করলে শিগগিরই তাদেরকে ইইউর অন্যান্য অংশে স্থানান্তর করা হবে।
রোববার পৃথক একটি ঘটনায় আরেকটি ডুবতে থাকা জাহাজ থেকে ৫০ জন অভিবাসীকে উদ্ধার করে আশ্রয় দেয়ার কথাও জানিয়েছে মাল্টা।
ভূমধ্যসাগরে এই অভিবাসী সংকটের স্থায়ী একটি সমাধান বের করতে ইইউ নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সি-আই।
নিষেধাজ্ঞা না মেনে ইটালির ল্যাম্পেডুসা বন্দরে ৪১ জন অভিবাসন প্রত্যাশীসহ স্থানীয় সময় শনিবার দিনের বেলা নোঙর করে আরও দাতব্য সংস্থা মেডিটেরেনিয়া’র অভিবাসী উদ্ধার জাহাজ ‘অ্যালেক্স’। কিন্তু বন্দরে নোঙর করার পর থেকে এ পর্যন্ত জাহাজের যাত্রী ও ক্রু সবাইকেই জাহাজের ভেতরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। জাহাজ থেকে একজনও যেন নামতে না পারে সেজন্য তাদের দিকে কড়া নজর রাখছে পুলিশ।
একই রকম পরিস্থিতিতে গত ২৮ জুন আরেকটি অভিবাসী উদ্ধার জাহাজ ‘সি-ওয়াচ ৩’ ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধার করা অর্ধশতাধিক আফ্রিকান অভিবাসীকে নিয়ে ল্যাম্পাডুসা বন্দরে নোঙর করে। নোঙর করার সাথে সাথেই জাহাজের ক্যাপ্টেন কারোলা রাকেটেকে গ্রেপ্তার করে ইটালি পুলিশ।
ইটালি কর্তৃপক্ষ জাহাজটিকে তাদের জলসীমায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করলেও সেটি ২৮ জুন গভীরে রাতে ল্যাম্পেডুসা দ্বীপ বন্দরে নোঙর করে। আর তখনই জাহাজের ক্যাপ্টেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।