টানা দুই সপ্তাহের অস্থিরতার পর অবশেষে ইটালির ল্যাম্পেডুসা বন্দর থেকে অভিবাসী উদ্ধার জাহাজ সি-ওয়াচ ৩’র ক্যাপ্টেন কারোলা রাকেটেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
কারোলার সি-ওয়াচ ৩’তে লিবিয়া উপকূল থেকে উদ্ধার করা অর্ধশতাধিক আফ্রিকান অভিবাসী ছিল।
ইটালি কর্তৃপক্ষ জাহাজটিকে তাদের জলসীমায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করলেও সেটি শুক্রবার গভীরে রাতে ল্যাম্পেডুসা দ্বীপ বন্দরে নোঙর করে। আর তখনই জাহাজের ক্যাপ্টেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিবিসি জানায়, জার্মানির মালিকানাধীন ও নেদারল্যান্ডসের পতাকাবাহী জাহাজ সি-ওয়াচ ৩’র ক্যাপ্টেন কারোলা রাকেটে ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধার করা ৫৩ জন অভিবাসীকে নিয়ে ইটালি সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গত সপ্তাহে ইটালির জলসীমায় প্রবেশ করেন এবং ২৬ জুন ল্যাম্পেডুসা দ্বীপে নোঙর করার সিদ্ধান্ত নেন।
গত ১২ জুন থেকে জাহাজটি আন্তর্জাতিক জলসীমায় অবস্থান করছিল। জরুরি স্বাস্থ্যগত কারণে ইতোমধ্যে ১৩ জন অভিবাসীকে ইটালির কোস্টগার্ড জাহাজ থেকে নামিয়ে নেয়।
সি-ওয়াচ ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছিল, জাহাজের ভেতরকার পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার কারণেই ৩১ বছর বয়সী জার্মান ক্যাপ্টেন ইটালির জলসীমায় প্রবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
রাকেটে বলেন, নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তার মনে হয়েছে, এমন জরুরি অবস্থায় সমুদ্র আইন তাকে ইটালিতে নোঙর করার অনুমতি দেয়। ‘অনেক হয়েছে। আমরা ঢুকছি। উস্কানি দিতে না, জরুরি পরিস্থিতিতে দায়িত্ব হিসেবে,’ ক্যাপ্টেনের বরাতে টুইট করেছিল সি-ওয়াচ।
এ ঘটনায় আইন অমান্য করার কারণে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানোর জন্য প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন ইটালির অতি ডানপন্থি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও সালভিনি।
ইটালির জলসীমায় ঢোকার প্রায় সাথে সাথেই ইটালি কোস্টগার্ড উদ্ধারকারী জাহাজটিকে বাধা দেয়।
অবশেষে নিষেধাজ্ঞা না মেনে ইটালির বন্দরে নোঙর করার সাথে সাথেই ‘যুদ্ধজাহাজের নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণ’ করার অপরাধে জাহাজের ক্যাপ্টেনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম রাই।
রাইয়ের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, জাহাজ থেকে হাতকড়া পরিয়ে ক্যাপ্টেন কারোলাকে নামিয়ে আনছে পুলিশ।
জুনে প্রণীত এক নির্দেশ অনুযায়ী ইটালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে, কোনো জাহাজকে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বা শৃঙ্খলার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ মনে করলে মন্ত্রণালয় একে দেশের অভ্যন্তরীণ জলসীমায় প্রবেশে বাধা দেওয়ার। এমনকি চাইলে জরিমানাও করতে পারে।