বিপিএলে নজর কেড়ে দ্রুতই চলে আসেন জাতীয় দলের আঙিনায়। টি-টুয়েন্টি, ওয়ানডের পর খেললেন টেস্টও। রঙিন পোশাকে সুযোগের অভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারছিলেন না আরিফুল হক। দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে সুযোগ মেলা মাত্রই প্রমাণ দিয়েছেন সক্ষমতার। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সাদা পোশাকে নিজের প্রথম ইনিংসে অপরাজিত থাকেন ৪১ রানে, পরের ইনিংসে করেন ৩৮ রান।
টেস্ট ক্রিকেটে নতুন, সেটি উপলব্ধি করতে দেননি সাবলীল ব্যাটিংয়ে। শেষের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে লড়াই করার যে মানসিকতা দেখিয়েছেন, প্রশংসিত হয়েছে সেটিও। এতে অবশ্য আহলাদে আটখানা হচ্ছে না আরিফুল। এগিয়ে যেতে চান সামনে। স্বপ্ন দেখেন বড় কিছুর। শুক্রবার মিরপুরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এ অলরাউন্ডার জানালেন, টেস্ট অভিজ্ঞতা ও স্বপ্নের পরিধি নিয়ে।
প্রথম টেস্ট, ব্যক্তিগতভাবে কেমন গেল?
প্রথম টেস্ট ভালোই গিয়েছে আসলে। আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বোলাররা বাজে বল দেবে না, ওভাবেই অপেক্ষা করতে হবে। যেটা বোঝা দরকার। খেললে যে চিন্তা-ভাবনায় পরিবর্তন আনে, সেটা হয়েছে আমার। চিন্তা-ভাবনায় পরিবর্তন এসেছে।
জাতীয় লিগে রান করে এসেছেন। একটি ডাবল সেঞ্চুরি ছিল। সেটি বাড়তি আত্মবিশ্বাস যুগিয়েছে?
অবশ্যই। জাতীয় লিগে দুইশ করার (২৩১) পর আসলে আমার আত্মবিশ্বাস ভালো ছিল। আর প্রথম টেস্টে হয়ত ব্যাটিং ভালোই করেছি। আত্মবিশ্বাস ভালো আছে।
আপনাকে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে বিবেচনা করা হচ্ছিল। সুযোগ সেভাবে মিলছিল না। তাগিদ ছিল নিজেকে মেলে ধরার?
আমার আসলে স্বপ্ন ছিল টেস্ট খেলার। চাই দীর্ঘদিন টেস্ট খেলতে বা জাতীয় দলে থাকতে। সব ফরম্যাটেই খেলার ইচ্ছা। যে ফরম্যাট যেভাবে খেলা দরকার, ওভাবেই খেলার চেষ্টা করব।
অনেকদিন ধরেই জাতীয় দলের সাথে আছেন। ড্রেসিংরুম শেয়ারিং, এটা কতটা কাজে দিয়েছে?
যদি নাও খেলেন, জাতীয় দলে থাকলে অভিজ্ঞতা অর্জন হয়। বড় টিমের সাথে খেলা বা বড় বড় খেলোয়াড়দের সাথে ড্রেসিংরুম শেয়ার করা, এটাতে বুঝতে অনেক সুবিধা হয়। বড় ভাইরা যখন কিছু বলেন, সেটা কাজে দেয়। আন্তর্জাতিক ম্যাচ কেমন বা কীরকম ধারণা তৈরি হয়।
একাদশে সুযোগ কম পেলে তো অনেকসময় নিজের সক্ষমতা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। এমন পারফরম্যান্সের পর নিজেকে দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ মনে করেন কিনা?
এটা(একাদশে জায়গা) আমার হাতে নেই, কোন ম্যাচে খেলব; কোন ম্যাচে খেলব না। মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকব। নিজের কাজটা করে যাবো, কীভাবে ভালো করা যায়। যে রান করেছি ওটা ভুলে গেছি। সামনে কীভাবে ভালো করা যায় সেটাই মূল ভাবনা।
আরও কিছু রান করার সুযোগ ছিল প্রথম ইনিংসে। আবু জায়েদ রাহি রানআউট হওয়ায় ফিফটি হল না। কোনো আক্ষেপ আছে?
শেষ বলে সিঙ্গেল নিতে চেয়েছিলাম। শেষে মেরে কিছু রান হয়তো বাড়াতে পারতাম। মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং ছিল।
অপেক্ষা শেষে খানিকটা হলেও তো নিজেকে দেখানো গেল…
এখনও ওরকম কিছু করিনি। আমার চিন্তা বড় কিছু করার। শতভাগ না পারি, লক্ষ্যের কাছে ৯০ ভাগ যেন যেতে পারি। ম্যাচ না খেললে সবারই একটু মন খারাপ হয়। ওটা আমার হাতে নেই। আমি আমার কাজটা যেন করে যেতে পারি।
টেলএন্ডারদের নিয়ে খেলার মানসিক প্রস্তুতি নিশ্চয়ই ছিল?
আমি বিসিএলে, জাতীয় লিগে টেলএন্ডারদের নিয়েই বেশিরভাগ সময় ব্যাটিং করি। ওই সময় পরিকল্পনা অন্যরকম থাকে। ৪টা বল খেলতে হবে, অপর ব্যাটসম্যানকে একটা-দুইটা বল দেয়ার থাকে। কেননা টেলএন্ডারদের কাছে ওভাবে আশাও করতে পারেন না। ওরাও চেষ্টা করছিল আমাকে সুযোগ(স্ট্রাইক) দেয়ার। সামনে হয়তো ৪-৫টা বল আমি খেলব। ওদের একটা-দুইটা দেব।
রান করার পর আপনার বোলিং নিয়ে কথা হচ্ছে না। বোলিং নিয়ে কী ভাবছেন?
বোলিং নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আসলে ওটা(সিলেটের উইকেট) আমার বোলিংয়ের জন্য মানানসই উইকেট ছিল না। ওরকম উইকেট হলে হয়তো আরও বোলিং করতাম। ঘরোয়ায় আরও ভালো করতে হবে। বিপিএলে যদি আরও ভালো করতে পারি, তাহলে জাতীয় দলেও বোলিংয়ের সুযোগ পাবো।