‘আমার বাবাটাকে তোমরা একটু খুঁজে দাও। আমার রোহান কই থেকে যেন আমাকে ডাকছে। আমার বাবাটা কই?’
এভাবেই বিলাপ করে ঢাকা মেডিকেলের মর্গের পাশের রাস্তায় নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলেকে খুঁজছেন মা রুবি বেগম। পাশেই রোহানের বাবা মো. হাসান নির্বাক দাঁড়িয়ে। তার দু’চোখ গড়িয়ে পানি পড়ছে।
তাদের সান্ত্বনা দিচ্ছেন স্বজনরা। এদের একজন মো. মোমিন খান। চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন, রোহান তার চাচাত ভাই। বুধবার রাতে চকবাজারে আগুন লাগার সময় ওরা কয়েকজন একসাথে ছিলেন। তাদের একজন আরাফাত পুড়ে মারা গেছেন। তার লাশ শনাক্ত করা হয়েছে।
ওদের সঙ্গে গতকাল অন্য যারা ছিলেন তারা বলেছেন, রোহান ও আরাফাতকে একসাথে দেখেছিলেন তারা। ‘এখন আমরা রোহানকে খুঁজছি। রাত ১১ টার পর থেকেই ওর ফোন বন্ধ।’
মোমিন খান আরো জানান, তানজিল হাসান খান রোহান নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ’র ছাত্র। ওরা তিন ভাই বোন। ছোট ভাই রুদ্র ক্লাস সেভেনে পড়ে আর বোন উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্রী রিয়া। রোহানদের বাসা পুরান ঢাকার আগামসি লেন।
রাজধানীর চকবাজারে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে এখন পর্যন্ত ৭৮-এ দাঁড়িয়েছে। দগ্ধসহ আহত অর্ধশতাধিক।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ জানিয়েছেন, চুরিহাট্টায় অগ্নিদগ্ধে নিহতদের মধ্যে যাদের মরদেহ পুরোপুরি পুড়ে গেছে তাদেরকে শুধু দেখে শনাক্ত করা সম্ভব নয়। এমন মরদেহগুলোর পরিচয় ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
নিহতদের মধ্যে পুরুষ ৬৬ জন, নারী ৭ জন ও শিশু ৫ জন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে দগ্ধ ৯ জন ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি, একজন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।
মৃতদের তালিকা করছে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি।