শুরুটা হয়েছিল অনেক আগেই। বাংলাদেশের কিশোরী ফুটবলারদের সেই দাপট অব্যাহত। নিকট অতীতে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ কিংবা বর্তমানে হংকংয়ে চার জাতি ফুটবল টুর্নামেন্টে তাদের গোল ক্যারিশমা চলছেই। এই টুর্নামেন্টে শনিবার দ্বিতীয় ম্যাচে ইরানকে ৮ গোলে ভাসিয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ দল। এর আগে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে মালয়েশিয়া অনূর্ধ্ব-১৫ দলকে ১০-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। শুধু তাই নয়, প্রথম ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেছে শামসুন্নাহার, দ্বিতীয় ম্যাচে অবশ্য শামসুন্নাহার একা নন, তার সঙ্গে হ্যাটট্রিক উৎসেবে যোগ দিয়েছে তহুরাও। তার প্রথম গোলটি আবার দর্শকদের ঠিকঠাক মতো আসন নেওয়ার আগেই সম্পন্ন হয়। রোববার শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হংকং। এই ম্যাচ ড্র করলেই চ্যাম্পিয়ন হবে বাংলাদেশ। এভাবেই আন্তর্জাতিক ফুটবলে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বাংলাদেশের মেয়েরা। তার আগে বাংলাদেশের এই দলটি ঢাকায় অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ ফুটবলে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। বাংলাদেশ গোটা টুর্নামেন্টে ১৩ গোল দিয়ে এক গোলও হজম করেনি! ওই টুর্নামেন্ট মাতিয়েছিল কিশোরী ডিফেন্ডার আঁখি খাতুন। তার বীরত্বে মুগ্ধ হয়ে মাঠ ছাড়ার সময় বাফুফের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলি তাকে তুলনা করেছিলেন বার্সার পিকের সঙ্গে! এতো গেল বাংলাদেশের ফুটবলে মেয়েদের সাফল্যের এক দিক। বিপরীতে বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেওয়া এই মেয়েদের করুণ দিকও রয়েছে। সেদিকে তাকালে কলসিন্দুরের মেয়েদের কথাই প্রথমে আসবে। ওই মেয়েদের অবদানে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবলের ফাইনালে ভারতকে বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু টুর্নামেন্ট শেষে তাদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য কোনো গাড়ি পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। ফলশ্রুতিতে তাদের ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে চরম ভোগান্তি আর অপমানের শিকার হতে হয়েছে। এছাড়া তিন দিন জ্বরে ভুগে মৃত্যুর কাছে হেরে গেছে কলসিন্দুরের মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন। আমরা মনে করি, ফুটবলকন্যাদের সুযোগ সুবিধার দিকে বাফুফেসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নজর না দিলে তাদের অগ্রযাত্রা ধরে রাখা সম্ভব হবে না। তাই তাদেরকে সঠিকভাবে গড়ে তুলতে যাবতীয় সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাই। বিশ্ব ফুটবলে বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেওয়ার এই অগ্রযাত্রায় আমরা আর কোনো করুণ দিক দেখতে চাই না। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ দলকে আবারো অভিনন্দন।